সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত ‘পাসপোর্ট বিভাগ’

দেশের সেবা খাতগুলোর মধ্যে পাসপোর্ট বিভাগ সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাত। প্রায় ৭৭ শতাংশ মানুষকে এখান থেকে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতি ও ঘুষের শিকার হতে হয়েছে।

রাজধানীর ধানমণ্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কার্যালয়ে বুধবার (২৯ জুন) ‘সেবা খাতে দুর্নীতি জাতীয় খানা জরিপ ২০১৫’ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশের ১৫ হাজার পরিবারের ওপর পরিচালিত জরিপে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, জাতীয়ভাবে প্রক্কলিত মোট ঘুষ বা নিয়ম বর্হিভূত অর্থের পরিমাণ ৮৮২১.৮ কোটি টাকা। এই প্রাক্কলিত অর্থের পরিমাণ ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের বাংলাদেশের জিডিপি’র ০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কর্তৃক পরিচালিত ‘সেবাখাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০১৫’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৫ সালে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ৬৭ দশমিক ৮ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে; ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ খানাকে ঘুষ দিতে হয়েছে। খানা প্রতি বাৎসরিক গড় পরিমাণ ৪ হাজার ৫৩৮ টাকা।

জরিপে আরো বলা হয়, ২০১৫ সালে বিভিন্ন সেবা খাতে দুর্নীতি ও হয়রানির হার ২০১২ তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত (৬৭ দশমিক ৮ শতাংশ বনাম ৬৭ দশমিক ৩ শতাংশ) থাকলেও সেবাগ্রহণকারী খানা সমূহকে ২০১২ সালের তুলনায় প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা বেশি প্রদান করতে হয়েছে। জরিপে সেবাগ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাতগুলো যথাক্রমে পাসপোর্ট (৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ), আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৭৪ দশমিক ৬ শতাংশ) শিক্ষা (সরকারি ও এমপিওভুক্ত) (৬০ দশমিক ৮ শতাংশ), বিআরটিএ (৬০ দশমিক ১ শতাংশ), ভূমি প্রশাসন (৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ), বিচারিক সেবা (৪৮ দশমিক ২ শতাংশ)ও স্বাস্থ্য (৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ)।

বিভিন্ন খাতে সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের জনগণের ওপর ঘুষ তথা দুর্নীতির বোঝা অধিক। জরিপে অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৭১ শতাংশ খানা ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ প্রদানের মূল কারণ হিসেবে ‘ঘুষ না দিলে কাংঙ্খিত সেবা পাওয়া যায় না’ এই কারণটিকে চিহ্নিত করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন টিআইবি’র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. ওয়াহিদ আলম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা রহমান ও ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ নূরে আলম। টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।



মন্তব্য চালু নেই