সবচেয়ে প্রাচীন কুঠার

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয় প্রত্নতত্ত্ববিদরা মানবনির্মিত সবচেয়ে প্রাচীন কুঠারটি আবিষ্কার করেছে। প্রস্তর যুগের সন্ধিক্ষণে ওই কুঠারটি কোনো আদিম মানবই তৈরি করেছিলেন এবং এর বয়স প্রায় ৫০ হাজার বছর বলেও দাবি প্রত্নতত্ত্ববিদদের। ছোটো আকৃতির এই পাথুরে কুঠারটি দেখতে অনেক মসৃন এবং এটা তৈরির সময় কারিগর যে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করেছিলেন সেটা দেখেই বোঝা যায়।

অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কিম্বার্লি অঞ্চলে এই কুঠারটি পাওয়া গিয়েছে। এযাবৎ প্রাপ্ত প্রাচীন পাথুরে কুঠারের মধ্যে এটিই সবচেয়ে প্রাচীন এবং এর আগে প্রাপ্ত কুঠারের চেয়ে এই কুঠারের বয়স দশ হাজার বছর বেশি। বিজ্ঞানীদের ধারনা, প্রাপ্ত প্রস্তরখন্ডটি ৪৫ থেকে ৪৯ হাজার বছরের পুরনো এবং এই কুঠারই প্রমাণ করে যে, অস্ট্রেলিয়ায় বাইরে থেকে মানুষ এসে বসতি শুরু করেছিল। বর্তমান সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় যে সব আদিবাসী গোষ্ঠিদের আমরা চিহ্নিত করছি, বলা হচ্ছে তারাই হলো এখন পর‌্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন জনগোষ্ঠি। কারণ তাদের শিকার করার কৌশলের সঙ্গে প্রাচীন মানবদের শিকারের কৌশলের মিল রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সু ও’কনর জানান, পৃথিবীর কোথাও এতটা পুরনো কুঠার আবিষ্কৃত হয়নি। জাপানে যে কুঠারটি পাওয়া গিয়েছিল তা ৩৫ হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু আমরা দেখতে পাই অধিকাংশ দেশেরই তাদের কৃষিজীবি অবস্থার ইতিহাস দশ হাজার বছরের বেশি আগায় না।’ তাহলে কি অধ্যাপক স্যু বলতে চাইছেন যে, দশ হাজার বছর আগে পৃথিবীতে কৃষিভিত্তিক সমাজের অস্তিত্ব ছিল না!

যে স্থানটিতে ওই প্রস্তর কুঠারটি পাওয়া গিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে কার্পেন্টার গ্যাপ নামক ওই স্থানটিই সর্বপ্রথম অস্ট্রেলিয়ার আধুনিক মানুষেরা দখল করেছিল। খাবারের উচ্ছিটাংশ, চিত্রকর্মসহ আরও কিছু উপাদান ওই গুহায় পাওয়া গেছে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার হিচকক এবিষয়ে বলেন, প্রাচীন কুঠার প্রাপ্তি প্রমাণ করে যে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাংশ একটা সময় গ্রীস্মপ্রধান ছিল। এর থেকে ধারনা করা যায় যে, অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রান্তে দুই ধরণের গোষ্ঠি বসতি শুরু করেছিল। অন্তত তাদের ফেলে যাওয়া উপাদানগুলো দেখে তাই প্রতীয়মান হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই