সবচেয়ে সুখী মানুষের ওপর ১২ বছরের গবেষণায় যা মিলল

তিব্বতের বৌদ্ধ ভিক্ষু ম্যাথিউ রিচার্ডকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি। তিনিই জানালেন, কেন মানুষ অসুখী হয়।

ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের অধীনে ১২ বছরব্যাপী ধ্যান ও মায়া বিষয়ক এক গবেষণায় অংশ নেন ৭০ বছর বয়সী ভিক্ষু ম্যাথিউ। জন্মগতভাবে ফ্রান্সের নাগরিক হলেও তিনি বাস করেন নেপালের এক আশ্রমে।

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর তিব্বতের আত্ম্যাধিক প্রধান দালাই লামাকে ম্যাথিউ রিচার্ড বলেছিলেন, তাঁর ইচ্ছে করছে অদৃশ্য হয়ে যেতে। জবাবে দালাই লামা বলেন, এই পৃথিবীর তাঁর (ম্যাথিউ রিচার্ড) দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘যদি তাঁরা চায় যে তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হবে, তবে তাই হও।’

ম্যাথিউ রিচার্ড যে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ সে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে স্নায়ুবিজ্ঞানী রিচার্ড ডেভিসন ওই ভিক্ষুর শরীরে ২৫৬টি সেন্সর লাগান। এ সময় মায়া বা সমবেদনার ধ্যান করছিলেন ম্যাথিউ। ডেভিসন দেখতে পান যে, ধ্যান চলাকালে ম্যাথিউয়ের মস্তিষ্ক গামা তরঙ্গের একটি স্তর উৎপাদন করে। যার সাথে চেতনা, মনোযোগ, শেখা এবং স্মৃতির সম্পর্ক আছে। যা আগে কখনোই কোনো বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনে উঠে আসেনি।

সেই সময় ডেভিনসর লেখেন, স্ক্যানে দেখা যায় ম্যাথিউয়ের মস্তিষ্কের বাম দিকের বহিরাবরণ বেশি কার্যকর। যার কারণে নেতিবাচকতার প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে বেশি বেশি সুখী থাকতে পারেন তিনি।’

নিজের জীবন দর্শন সম্পর্কে আলটারিজম, অন দ্য পাথ টু এনলাইটেনমেন্ট অ্যান্ড হ্যাপিনেস নামে একটি বইও লিখেছেন ম্যাথিউ রিচার্ড।

অন্যরাও কীভাবে সুখী হতে পারে জানতে চাইলে বিজনেস ইনসাইডারকে ম্যাথিউ বলেন, দয়াশীলতা আর নিঃস্বার্থ হওয়াই সুখী হওয়ার চাবিকাঠি। প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট মনকে ভালো ভালো কথা ভাবতে শেখানোর চর্চা এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

এই সুখী ভিক্ষুর কথা প্রমাণ করেছে বিজ্ঞানও। স্নায়ুবিজ্ঞানী ডেভিসন এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, প্রতিদিন ২০ মিনিটের ধ্যান মানুষকে সুখী করে।

তবে শুধু সুখী হওয়ার নয়, অসুখী হওয়ার কারণও জানিয়েছেন ম্যাথিউ রিচার্ড। আর সেটি হলো অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করা। অন্যের সঙ্গে নিজের জীবনের তুলনা করার মাধ্যমে সুখকে হত্যা করা হয় বলেও মনে করেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই