সবার মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার : খালেদা

বর্তমান সরকার সবার মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগকে জঙ্গি দল বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এদের (আওয়ামী লীগ) কাছে দেশি-বিদেশি গোলাবারুদ ও অস্ত্র পাওয়া যায়। তাই এদের ধরলে সত্যিকার বিচার হবে, দেশে নিরাপত্তা ও শান্তি আসবে। আমরা বলেছি জঙ্গি ধরেন, আমরা জঙ্গি ধরার পক্ষে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এই সব জঙ্গি।

খালেদা জিয়া বলেন, আজকে বিচার বিভাগের ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে গেছে। আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগের নির্দেশ অমান্য করে একটার পর একটা কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন সাদা পোশাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার বিএনপির কোনো নেতাকে কথা বলতে দিচ্ছে না। সকলের মুখ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সাঁড়াশি অভিযানে ১৫ হাজার নিরীহ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে যার মধ্যে তিন হাজার বিএনপির নেতাকর্মী রয়েছে। তাদের মুক্তি দাবি জানান তিনি।

অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় তাই সারাদেশে চলছে লুটপাট আর দখল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত দখল হয়ে গেছে। সাংবাদিকরাও সেখানে কিছু করতে পারে না। গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে এখন তারা (আওয়ামী লীগ) সবকিছু দখল করছে। নির্বাচন দেয় না তারা। নির্বাচন দিতেও ভয় পায়।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে সরকার আজকে একের পর এক যে কাজ করছে তার বৈধতা নেই। তাদের যদি সামান্যতম সম্মান ও লজ্জাবোধ থাকতো তাহলে তারা ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দেয়ার ব্যবস্থা করত।

ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের আমলে নাইকো মামলা দেয়া হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপি প্রধান বলেন, সরকার এখনও আমাদের হয়রানি করে যাচ্ছে। নাইকোর সঙ্গে আমি জড়িত নই, হাসিনা জড়িত। হাসিনার নির্দেশে এই দুর্নীতি হয়েছে। তাই হাসিনার মামলা উঠে গেলে আমার মামলা কি করে চলে ? হাসিনার মামলা উঠে গেলে আর কারো মামলা থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, আমরা ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। নিরপেক্ষ বিচার পাওয়া যায় না। যত ভাল আইনজীবী হোক না কেন ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না।

খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সাদাপোশাকে গ্রেফতার চালিয়ে যাচ্ছে। সন্দেহভাজন জঙ্গি ফায়জুল্লাহ ফাহিমকে ‘ক্রসফায়ার’নয়, হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমান, মাহমুদুর রহমান মান্নার মুক্তির দাবি জানান খালেদা।

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধূরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, নয়া দিগেন্তর সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বাংলাদশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।

সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে ইফতার মাহফিলে ছিলেন, এম আবদুল্লাহ, কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই