সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের চমক দিতে চায় আ.লীগ

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে আগত বিদেশি অতিথিদের ‘চমক’ দিতে চায় দলটি। চমকের অংশ হিসেবে উপহারের পাশাপাশি অতিথিদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার কথা ভাবছেন দলটির নেতারা। আমন্ত্রিত অতিথিদের সেবায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন একজন ‘হোস্ট অফিসার’। এরাই অতিথিদের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে ‘চমক’ দেবেন তাদের। অভ্যর্থনা উপ-কমিটির বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা উপ-কমিটির এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে কমিটির একাধিক সদস্য জানান।

অভ্যর্থনা উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের ১৪টি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ২০-২৫ জন বিদেশি ডেলিগেট সম্মেলনে যোগ দেবে বলে আশা করছে কমিটি। সম্মেলনে অতিথিদের স্বাগত জানাবেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মুহম্মদ জমির। এ বিষয়ে বুধবার দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক হবে। বিমানবন্দরে অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হবে এবং প্রত্যেক অতিথির সঙ্গে একজন করে ‘হোস্ট অফিসার’ থাকবেন।

বৈঠকে অভ্যর্থনা উপ-কমিটির সদস্য ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, এবার প্রথম আমি আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যুক্ত হয়েছি। এর আগে সম্মেলনে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। তবে কয়েকটি সার্ক সম্মেলনে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রস্তাব রেখেছি যেসব বিদেশি অতিথি সম্মেলনে আসবেন তাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত খোঁজ আমরা রাখতে পারি। যেমন- তিনি কোন ওষুধ খান, কোন বই পড়তে পছন্দ করেন। কি খেতে পছন্দ করেন ইত্যাদি বিষয়ে। এসব আমরা অতিথিদের স্ত্রীদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারি। অতিথিরা যদি তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায় সেটা করিয়ে দেয়া। যাতে কোনোভাবে তারা পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবন মিস না করে। এতে আমন্ত্রিত অতিথিদের ‘সারপ্রাইজ’ দিতে পারলে তারা খুশি হবেন।

এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে দীপু মনি বলেন, সম্মেলনে যোগ দিতে যেসব অতিথি আসবেন তাদের প্রত্যেকের জন্য একজন ‘হোস্ট অফিসার’ থাকবেন। তারা অতিথিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকবেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিদেশিরা বাংলাদেশে চারদিন থাকবেন। এই কয়েকদিন তাদের সঙ্গে একজন করে ‘হোস্ট অফিসার’ থাকবেন। সম্মেলনের বাইরে কোন অতিথি কোথাও যেতে চাইলে তাদের জন্য নিরাপত্তাসহ সংসদ সদস্যদের (সংসদ সদস্যসহ) গাড়ি থাকবে। এর বাইরে গ্রুপ আকারে অতিথিরা কোথাও যেতে চাইলে তাদের জন্য নিরাপত্তাসহ বড় এসি বাস থাকবে।

বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে যেসব ‘হোস্ট অফিসার’ থাকবেন তারা সবাই অভ্যর্থনা কমিটির প্রধান ২-৩ জনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন বলে জানান দীপু মনি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে যেসব হোস্ট অফিসার থাকবেন তাদের একটা তালিকা তৈরির প্রস্তাব করেন। ৩০ জনের একটা টিম করা হবে। এই টিমের সদস্যরা যেসব বিদেশি আসবেন তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। তথ্য সংগ্রহের কাজে যারা ভালো করবে তাদের ‘হোস্ট অফিসার’ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হবে।

বৈঠকে সম্মেলনে দেশের প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা রঙের চেয়ার থাকবে বলে জানান অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, সবাই তাদের নির্ধারিত চেয়ারে বসবেন।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, সম্মেলনে মঞ্চ প্যান্ডেলে আমন্ত্রিত অতিথিদের নির্ধারিত আসনে যেন দলের লোকজন না বসে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া প্রবীণ নেতাদের মর্যাদাসহকারে আসন দিতে হবে। সম্মেলনে আগত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-কমিটির সদস্য সাহারা খাতুন, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবদুস সোবহান গোলাপ, আফজাল হোসেন, আব্দুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুহম্মদ জমির, হাবিবে মিল্লাত ও মনিরুজ্জামান মনির।খবর জাগো নিউজের।



মন্তব্য চালু নেই