রাণীনগরে ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষকরা

সরকার ঘোষিত ৯২০ টাকা মন ধান কৃষকরা বিক্রি করছেন ৬৮০-৭শত টাকায়!

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা : নওগাঁর রাণীনগরে ধান/গমের ন্যায্য মূল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। সরকার ঘোষিত ৯২০ টাকা মন ধান রাণীনগরে কৃষকরা বিক্রি করছেন ৬ শত ৮০-৭শত টাকা দরে, ফলে প্রতিমন ধানে প্রায় ২০০-২৫০ টাকা হারাচ্ছেন কৃষকরা।

সারাদেশে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার ২৩ টাকা কেজি দরে ধান এবং ২৮ টাকা কেজি দরে গম ক্রয় করার ঘোষনা দেন। এই ঘোষনা মোতাবেক রাণীনগর উপজেলায় সরকারীভাবে ২ হাজার ৬ শত ৫২ মেট্রিকটন ধান ও ২ শত ৪৮ মেট্রিকটন গম সরা-সরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হচ্ছে জানিয়েছেন খাদ্য কর্মকর্তা । রাণীনগর কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, এবার এই উপজেলায় প্রায় ১৯ হাজার ১শত ১০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৪শত ১৪ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিমন ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় প্রায় ৮শত-৮শত ২০ টাকা পর্যন্ত । প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ১৮-২২ মন ধান । যা বর্তমান বাজার মূল্যে বিক্রয় করলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের । প্রখর রোদ-বৃষ্টি অপেক্ষা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলানোর পর এমন লোকসানের কারনে হতাশ হয়ে পরেছেন কৃষকরা। অনেকেই এনজিও অথবা কোন ব্যাংক বা সমিতি থেকে সুদের উপর ঋন নিয়ে কিম্বা বাড়ীর গরু/ছাগল/হাঁস-মূরগী বিক্রি করে লাভের আসায় ধানের আবাদ করলেও আবাদে লোকসান হওয়ার কারনে নতুন করে সুদের জালে জড়িয়ে পরছেন তারা। নি¤œ ও মধ্য বিত্ত শ্রেনীর বর্গা চাষী কৃষকরা সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

উপজেলার জেঠাইল গ্রামের কৃষক শাহিন আলম, একডালা দক্ষিন পাড়া গ্রামের আতিয়ার রহমান, কালীগ্রাম কসবা পাড়ার আব্দুর রাজ্জাক শেখ ও কুজাইল গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানায়,এবার সার,কিটনাশক প্রয়োগ,পানি সেচের দাম এবং বিশেষ করে ধান কাটার মজুরি বেশি হওয়ায় বোরো ধান উৎপাদনে খরচ বেশি হয়েছে । বর্তমান বাজার দরে ধান বিক্রি করার কারনে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। অথচ সরকার ঘোষিত মূল্যে বাজারে ধান বিক্রি করতে পারলে বেশ কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। তাই সরকারীভাবে এউপজেলায় ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্রা আরো বৃদ্ধি করার দাবি জানান কৃষকরা ।



মন্তব্য চালু নেই