সহজ কিছু উপায়ে সতেজ করে তুলুন আপনার ফুসফুস

মানুষের শ্বসনতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ অঙ্গ হল ফুসফুস। শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করা ও শরীর থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড বের করে দেয়া এর প্রধান কাজ।বিভিন্ন ধরনের দূষণকারী ও যন্ত্রণাদায়ক পদার্থ, ধুলাবালি, ছত্রাক,ক্ষতিকারক জীবাণু ইত্যাদির প্রবেশ পথ ও এই ফুসফুস যা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।সুতরাং এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটিকে সুস্থ রাখার জন্য একে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।আপনার জীবনাচরণ এর কিছু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক কিছু উপাদান আছে যা দ্বারা ফুসফুসকে পরিষ্কার করা সম্ভব।

আসুন জেনে নেই সেই উপাদান ও উপায় গুলো কি –

১।গভীর ভাবে দম নিন
গভীর ভাবে শ্বাস নিলে শরীরে অনেক বেশী অক্সিজেন সরবরাহ করার মাধ্যমে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও স্ট্রেস কমে।

– আরামদায়ক একটি জায়গায় সোজা হয়ে শুয়ে আপনার হাতদুটো পেটের উপর রাখুন
– চোখ বন্ধ করে গভীর ভাবে শ্বাস নিন ৫ গুনতে গুনতে
– ২ সেকেন্ড শ্বাস বন্ধ করে রাখুন, তারপর আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস ফেলুন ৫ গুনতে গুনতে
– এভাবে দিনে ২-৩বার করুন এবং প্রতি বৈঠকে ৯-১০ বার পুনরাবৃত্তি করুন

২।গরম পানি দিয়ে গোসল করুন বা স্টিম বাথ নিন
ফুসফুস পরিস্কার করার জন্য গরম পানি দিয়ে গোসল করা অনেক কার্যকরী।

– যদি স্টিম বাথ নেয়া যায় তাহলে অনেক ভালো কারণ গরম বাতাস ফুসফুস পরিষ্কারের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী।
– ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়
– গরম পানি দিয়ে গোসল করলে বা স্টিম বাথ নিলে ঘামের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায় এবং ফুসফুসকে বিষাক্ত পদার্থ বাহির করে দিতে সহায়তা করে

৩। ধূমপান বন্ধ করুন
ধূমপান করলে ফুসফুস অনেক বেশী বিষাক্ত হয়ে যায়। সিগারেটের মধ্যে নিকোটিন থাকে যা শ্বাসনালীর জন্য অনেক ক্ষতিকর। এটা ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় যার ফলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় এমনকি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ও থাকে।

৪। বিষাক্ত পণ্য থেকে দূরে থাকুন
আপনার গৃহস্থালির কিছু বিষাক্ত উপাদান যেমন-অনেক বেশী গন্ধযুক্ত এয়ার ফ্রেশনার,বিভিন্ন পরিষ্কারক দ্রব্য,ব্লীচ ও ডিটারজেন্ট এর ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন। কীটনাশক এর ব্যবহার কমিয়ে দিন, বিকল্প কিছু ব্যবহার করুন যা বিষাক্ত নয়। বাণিজ্যিক কীটনাশক গুলো ক্ষয়কারী গ্যাস নির্গত করে যা ফুসফুসের জন্য যন্ত্রণা দায়ক।

৫। এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করুন
ব্রকলি ও মাশরুমে প্রচুর এন্টিওক্সিডেন্ট থাকে যা ফুসফুসকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।

৬। ক্যারটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার খান
কিছু ফল ও সবজি যেমন- গাঁজর, মিষ্টি আলু, টমাটো ইত্যাদিতে ক্যারটিনয়েড আছে যা ফুসফুসের জন্য প্রয়োজনীয়। এটা ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমায় এবং এ্যজমা রুগীদের জন্য ও ভালো।

৭। ফলেট(Folate) সমৃদ্ধ খাবার খান
পালংশাক,লেবু জাতীয় ফল,মসূরডাল এগুলোতে প্রচুর ফলেট আছে যা ফুসফুস থেকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান দূর করে ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়া রোধ করে।

৮।জাম জাতীয় ফল খান
জাম জাতীয় ফল ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ভাল।এতে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট,ফ্ল্যাভনয়েড ও ক্যারটিনয়েড থাকে ফুসফুসের ইনফেকশন,ফুসফুস ক্যান্সার ও এ্যজমা ভাল করে।

স্বাস্থ্যকর ভাবে বসবাসের জন্য ও নির্মল বাতাস পাওয়ার জন্য গাছপালা ঘেরা পরিবেশে থাকা প্রয়োজন।তাই আপনার বাসার বারান্দায় বাগান করুন যেখানে আপনি কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন।আপনার ফুসফুসকে পরিষ্কার করা ও এর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য উপরের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা খুব কঠিন কিছু নয়।তাই আজ থেকেই এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করুন ও আপনার ফুসফুসকে চাঙ্গা করে তুলুন।

লেখাটি রিভিউ করেছেন:
ডাক্তার নাসরিন আক্তার
মেডিকেল অফিসার
দেবীদ্বার হেলথ কমপ্লেক্স
কুমিল্লা



মন্তব্য চালু নেই