সহপাঠীর হাত ধরেই জঙ্গি হয়ে ওঠে বগুড়ার খায়রুল

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হত্যাযজ্ঞের পর নিহত জঙ্গি বগুড়ার খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল তার সহপাঠী আব্দুল হাকিমের হাত ধরেই জঙ্গি হয়ে ওঠে, এমনট দাবি তার পরিবারের।

সোমবার দুপুরে খায়রুলের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বৃ-কুষ্টিয়া গ্রাম ঘুরে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

রোববার গণমাধ্যমে খায়রুলের ছবি দেখে বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা খায়রুলকে চিনতে পারেন। ওই দিন বিকেলে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল খায়রুলের বাবা দিনমজুর আবু হোসেন, মা পিয়ারা বেগম, বোন হোসনে আরা বেগম এবং দুলাভাই রঞ্জু মিয়াকে আটক করে।

পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর বোন ও দুলাভাইকে ছেড়ে দেয়। বাব-মা এখন পর্যন্ত ডিবি অফিসে আটক রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিরুল ইসলাম।

খায়রুল বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চোপনিগর ইউনিয়নের বৃ-কুষ্টিয়া গ্রামের দিনমজুর আবু হোসেনের ছেলে। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে খায়রুল হোসেন ওরফে পায়েল ছোট।

জঙ্গী খায়রুলের বোন হোসনে আরা জানান, খায়রুল গত ৬-৭ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে। স্থানীয় বিহিগ্রাম এডিইউ সেন্ট্রাল ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করার পর খায়রুলের সহপাঠী কামারপাড়ার আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল হাকিমের সঙ্গে ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এক মাস পর আব্দুল হাকিম বাড়ি ফিরে এলেও খায়রুলের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আব্দুল হাকিমকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলত, খায়রুল ভালো আছে। এ অবস্থায় ফেসবুকে খায়রুলের ছবি দেখে এবং ডিবি পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।

এদিকে সোমবার দুপুরে খায়রুলের সহপাঠী আব্দুল হাকিমের বাড়িতে গেলে তার মা সুফিয়া বেগম জানান, গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ শুক্রবার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হত্যাযজ্ঞের একদিন আগে রাত দেড়টার ফ্লাইটে তার ছেলে আব্দুল হাকিম ও কামারপাড়া দড়িপাড়ার মামুনুর রশিদের ছেলে মিনহাজ একসঙ্গে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে। তবে এসব ঘটনার সঙ্গে তার ছেলের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।

বৃ-কুষ্টিয়া গ্রামে তদন্তে আসা শাজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন কুমার কুন্ডু জানান, নিহত জঙ্গি ফয়সালের সহপাঠীদেরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিরা। ১২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি সংকটের রক্তাক্ত অবসান ঘটে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেনা নেতৃত্বাধীন সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে। অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়, যাদের জঙ্গিরা আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছিল। এই ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক ও তিনজন বাংলাদেশি। উদ্ধার অভিযানে নিহত হয় আরো ছয়জন।



মন্তব্য চালু নেই