শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ওমানে রাজকীয় জীবনযাপন

সাকা’র রায় কার্যকর হলেই নাশকতার পরিকল্পনা

চট্টগ্রামের রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক পালিয়ে নিরাপদে মথ্যপ্রাচ্যর দেশ ওমানে রাজকীয় বসবাস করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ওমান প্রবাসীরা অভিযোগ চট্টগ্রাম জেলার প্রবাসীদের নানামূখী হুমকী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রতিমাসে মাসহারা আদায় করে এই শৗর্ষ সন্ত্রাসী। প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন করে রাজার হালে বিলাস বহুল জীবন যাপন করার পাশাপাশি আদায় করা চাদাঁর টাকা দেশে পাঠিয়ে ভয়ংকর আন্ডার ওয়ার্ল্ডে নিয়ন্ত্রন করছে বিদেশে বসে।

ওমানের বাঙ্গালীদের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ওমানে বসে তার সহযোগী সন্ত্রাসীদের কাছে গোপনে টাকা পাঠিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ভারী অস্ত্র কিনেছে। চট্টগ্রাম নগরীতে ও রাউজানে তার রয়েছে বিশাল বাহিনী। সম্প্রতি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসির আদেশ হলে নড়েচরে বসেছে আজিজুল হক বাহিনী। এ বাহিনী অপেক্ষা করছে সাকা চৌধুরীর রায় কার্যকর হলে নানামূখী নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে বড় ধরনের একটি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির।

জানা গেছে ওমানে আত্বর্গোপনে চলে যাওয়া রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হককে ওমান প্রবাসী রাউজানের হরিশখাঁন পাড়া এলাকার বাসিন্ধা ওমানে বাংলাদেশ স্যোসাল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক অর্থ যোগানসহ নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে লালন পালন করছে। ওমানে কর্মরত রাউজানের ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার লোকজনও অভিযোগ করেছেন রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হককে ওমানে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সিরাজুল হক সহায়তা করার মাধ্যমে একটি ওয়ার্কসপ করে দেয়। ওয়ার্কসপের মালামাল রাউজানের প্রবাসীর কাছ আদায় করা চাদাঁর টাকায় ক্রয় করছে বলে জানা গেছে। ওমানে রাউজানের বিভিন্ন এলাকার প্রবাসীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে ঐ টাকা গোপনে দেশে পাঠিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক রাউজানে ও চট্টগ্রাম শহরে আর্ত্বগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হকের সহযোগী শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিক হক বাচাইয়্যা, দেলেয়ার, জমির উদ্দিন, মানিক্যা, আমির, আলী আজম অশ্রুইয়া, নেজাম, হেজা হাশেম, সহ আর্ত্বগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের লালন পালন করছেন ।

জানা যায়, ৭১ সালের মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যদন্ড প্রাপ্ত আসামী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর লালিত শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা গত ২০০২ সালের ২১ এপ্রিল রাতে রাউজানের হিংগলা ওয়ারা পুঞঞা বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের পরিচালক জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে তার শয়ন কক্ষে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করা হয় । সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা রাউজানের ডাবুয়ায় দুই সহোদর ছাত্র টিটু, বিটুকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

এছাড়া ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীরা পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন রাজু, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস মাষ্টার, ছাত্রলীগ নেতা এমদাদ, মোহাম্মদ মিয়া, নাসিম, মোহরম, রফিক, কৃষ্ণ দত্ত, ইকবাল হোসেন খোকন, গিয়াস উদ্দিন জামিল, সোহেল, রিটন, ফারুক হত্যাকান্ড সহ এলাকায় হত্যা, অপহরন, চাদাাঁবাজী ডাকতির ঘটনা সংঘঠিত করার মাধ্যমে রাউজানের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাখেন।

২০০৩ সালের ১৫ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে রাউজান পশ্চিম গহিরার ব্রীক ফিল্ড রাস্তার মাথায় একটি দোকানে বসা অবস্থায় গহিরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীরা হত্যার উদ্যেশে গুলি করে । সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে গুলি করার পর সন্ত্রাসীরা তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে এলাকা ছেড়ে চলে যায় । শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক তার সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মারাত্বক আহত অবস্থায় সিরাজুল হককে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিলে কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় পরে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের দুইটি পা কেটে ফেলতে হয়। ঘটনার পর সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক দুইটি পা হারিয়ে পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে বেচেঁ রয়েছেন। রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীকে ২০০৪ সালে রাউজানের ডাবুয়া রাবার বাগান এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করেন। সেনাবাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সহ গ্রেফতারের পর শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীদের রাউজান থানায় সোর্পদ করেন। রাউজান থানা পুলিশ শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীদের আদালতে সোর্পদ করেন। আদালত শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জেলে আটক থাকা অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক তার সহযোগী পুতুল বড়–য়া, নুরুল ইসলাম, মানিক্যা, জহুর মিয়া, এলাইচ মাহমুদ, গিয়াসকে জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষু হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে পুতুল বড়–য়া পলাতক রয়েছে, গিয়াস অপর সমন্ত্রাসীর হাতে নিহত হয় । শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে ঐ মামলা ও অনান্য মামলা থেকে জামিন নিয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার সহায়তায় জেল থেকে বের হয়ে আসেন। জেল থেকে বের হয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক তার সহযোগীদের চট্টগ্রাম শহরে ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদে রেখে গোপনে ওমানে পাড়ি জমায়। ওমানে বসে রাউজানের এক প্রবাসী সিরাজুল হকের সহায়তায় প্রবাসীদের কাছ থেকে চাদাঁ আদায় করে ওমানে রাজার হালে বিলাস বহুল জীবন যাপন করছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক। ওমান প্রবাসীর কাছ থেকে আদায় করা চাদাাঁর টাকা তার সহযোগীদের কাছে পাঠিয়ে গোপনে সন্ত্রাসীদের এলাকায় সক্রিয় করে তোলার প্রচেষ্টায় মেতে উঠেছে। রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের হিংগলা এলাকার আবদুল মোনাফের পুত্র শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক এক সময়ে পাহাড় থেকে কাঠ বহন করে জীবন যাপন করতো। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নেতৃত্ব দিয়ে আজিজুল হক রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসাবে এলাকায় পরিচিত হয়ে উঠে। শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক তেমন কোন লেখাপড়া শিক্ষা গ্রহন করেনি। বর্তমানে ওমানে বাংলাদেশ স্যেসাল ক্লাবের অনুষ্ঠানে ক্লাবের কর্মকর্তা সিরাজুল হক তাকে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে আসন দিচ্ছে বলে প্রবাসীরা অভিযোগ করেন।

একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ওমানের বাংলাদেশ স্যোনাল ক্লাবের অফিস ও অনুষ্ঠানে নিয়ে চেয়ারে বসানোর ফলে প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃৃষ্টি হয়েছে বলে ওমান প্রবাসী রাউজানের নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্ধা নুরুল আলম জানান। শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হকের সাথে ওমানে এসে দুবাইতে আর্ত্বগোপনে থাকা সন্ত্রাসী আলী হামজা, সৌদি আরবের জেদ্দায় আর্ত্বগোপনে থাকা রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক কয়েক দফে গোপন বৈঠক করেছেন বলে প্রবাসীরা জানান।

ওমানের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত রাউজানের এক প্রবাসী মিয়ার কাছ থেকে গত কয়েকদিন পুর্বে ওমানের ৮০ হাজার টাকার মালামাল চাঁদা হিসাবে নিয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক। রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক রাউজানের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বলে দাবী করে রাউজান থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হকের বিরুদ্ধে রাউজান থানায় এক ডজনের বেশী হত্যা, অস্ত্র আইন, অপহরণের ঘটনায় মামলা রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ও তার সহযোগীরা আর্ত্মগোপনে থাকায় তাদের গ্রেফতার করতে পারছেন পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই