সিরাত কী?

সিরাত একটি আরবি শব্দ। এর বহুবচন হচ্ছে সিয়ার। অর্থ চাল-চলন, গতি ইত্যাদি। আরবি ভাষার বিখ্যাত অভিধান ‘আল মুজাম আল আজম’ ও ‘মিসবাহুল লুগাত’-এ সিরাত শব্দের অর্থ করা হয়েছে-

১. যাওয়া, প্রস্থান করা, চলা।
২. গতি, পথ, পদ্ধতি, ধারা।
৩. আকার, আকৃতি, মুখাবয়ব।
৪. চেহারা, আকৃতি।
৫. অবস্থা।
৬. কর্ম-নৈপুণ্য, ঢঙ, চাল।
৭. সুন্নত।
৮. জীবন চলার ধরণ, প্রকৃতি, কাজকর্ম করার ধরণ, জীবন পরিচালনার ঢঙ।
৯. অভ্যাস।
১০. কাহিনী, পূর্ববর্তীদের গল্প বা কাহিনী এবং ঘটনাবলীর বর্ণনা ইত্যাদি।

অন্যদিকে ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’ সিরাতের অর্থ লিখেছে-
১. যাওয়া, যাত্রা করা, চলা।
২. মাজহাব বা তরিকা।
৩. সুন্নাহ।
৪. আকৃতি।
৫. অবস্থা।

৬. কীর্তি।
৭. কাহিনী, প্রাচীনদের জীবন ও ঘটনাবলীর বর্ণনা।
৮. নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর গাজওয়ার (যুদ্ধের) বর্ণনা।
৯. অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পর্ক, যুদ্ধ এবং শান্তির সময়ে মুহাম্মদ (সা.) যা বৈধ মনে করতেন তার বর্ণনা কিংবা মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন চরিত; সম্প্রসারিত অর্থে বীর পুরুষদের কীর্তির বর্ণনা।

পবিত্র কোরআনে কারিমে সিরাত শব্দটি শুধুমাত্র একবারই ব্যবহৃত হয়েছে। সূরা ত্বহার ওই আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তুমি তাকে ধরো এবং ভয় পেয়ো না। আমি তাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব, যেরূপ প্রথমে এটি ছিল।’

এখানে সিরাত শব্দটি আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। মোটকথা, সিরাতের আভিধানিক অর্থ হলো, কোনো ভালো মানুষের বা নেককার মানুষের চাল-চলন, ওঠাবসা, কাজ, মেজাজ-মর্জি। এককথায় জীবন পদ্ধতি বা জীবন চরিত।

আর সিরাত শব্দের পারিভাষিক অর্থ বোঝানো হয়েছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লামের সার্বিক জীবন চরিতকে।

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লামের বিখ্যাত জীবনী গ্রন্থগুলোর নামের সঙ্গে এই সিরাত শব্দটি সম্পৃক্ত দেখা যায়। যেমন- সিরাতে ইবনে ইসহাক, সিরাতে ইবনে হিশাম, সিরাতে হালবিয়া, সিরাতে রাসূল, সিরাতে মুগলতাই, সিরাতে খাতিমুল আম্বিয়া, সিরাতে সারওয়ারে আলম, সিরাতে মুহাম্মদিয়া, সিরাতে মোবারক মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.), সিরাতে মুহসিনে কায়েনাত (সা.), সিরাতুন্নবী ও সিরাতে মোস্তফা প্রভৃতি।



মন্তব্য চালু নেই