আচরণবিধি লঙ্ঘন !

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে ব্যবস্থা : ইসি

আনুষ্ঠানিক প্রচার কাজ শুরুর আগেই বিধি ভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।

তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইসি সচিবের মতে, নির্বাচনের পরিবেশ ভাল রয়েছে। এবারে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। তবে কোনো অনিয়ম হলে বা কারো কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় মিছিল, শোডাউন, জমায়েত, পথসভা ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার সমর্থকের ওপর হামলা, মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা দেওয়া এবং মনোনয়ন বঞ্চিতদের নানা কর্মসূচি পালনের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় প্রথম ধাপের (৭৩৯ ইউপিতে ভোট) মনোনয়নপত্র দাখিল।

আওয়ামী লীগ-বিএনপি ছাড়াও ১৯টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র হিসাবে নির্দলীয় ও রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন বঞ্চিতরা মনোনয়পত্র জমা দিয়েছে।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, সচিবালয় থেকে মনিটরিং করে কার্যত: কোনো কাজ হয় না। বিগত উপজেলা ও পৌর নির্বাচনে ইসি সচিবালয় থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়েছে। কয়েকজন ভিআইপিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এলাকা ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

এর কারণ হিসাবে দেখা গেছে ইসির প্রাথমিক নির্দেশনা কেউ মানে নি। আর ইসিও চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয় নি। এছাড়া এবারের নির্বাচনে শুরুর দিক থেকেই নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। অন্তত অর্ধডজন নির্বাচনী কাজে ধরা পড়েছে কর্মকর্তাদের অসাবধানতা ও ভুল। এতে করে নির্বাচন মনিটরিংয়ে ইসির সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে।

এ প্রসঙ্গে সোমবার ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল করতে হবে। ঢালাও অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। কখন, কোথায়, কে ঘটনা ঘটিয়েছে এগুলো থাকতে হবে অভিযোগে। অদৃশ্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘খুব ক্লোজলি পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। যেহেতু ইউপি অনেক বড় নির্বাচন, তাই সব জায়গায় আমাদের কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সরকারের প্রশাসনের জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। এতে সমস্যা হবে না।’

তিনি জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আগেও সুচারুরূপে নির্বাচন সম্পাদন করা হয়েছে। এবারও হবে। এক্ষেত্রে আমরা কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করবো। এছাড়া আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারাও ভোটগ্রহণে দায়িত্বরতদের পর্যবেক্ষণ করবে। ইউপি নির্বাচন যেহেতু সংখ্যাগত দিক দিয়ে একটা বড় নির্বাচন, সেহেতু নির্বাচন কমিশনের কাছে সব প্রার্থী সমান। সে স্বতন্ত্র বা দলের প্রার্থী হোক। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

এদিকে ইসি সচিবালয় থেকে নির্বাচনী বিধি মনিটরিংয়ে ভিজিল্যান্স ও পর্যবেক্ষক দল, আইনশৃংখলা রক্ষা সংক্রান্ত টিম এখনো গঠিত হয়নি। এছাড়া প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

একাধিক উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, তারা উভয় সংকটে ভুগছেন। একদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘন অন্যদিকে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেও আবার ভিন্ন ঝামেলা। তাই কোনো অ্যাকশনের পরিবর্তে যতটা শান্ত পরিবেশ রাখা যায় সেই প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।

তাদের মতে, পৌরসভার নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ নেওয়ার পরে বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। ফলে এবারে লিখিত অভিযোগের ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়া মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমাগ্রহণের কারণে বাড়তি চাপে রয়েছেন তারা। ২ মার্চ পর্যন্ত এই ঝামেলা থাকবে। এরপরে মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং করা হবে।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রার্থী হওয়ার পর সবার দিকে সমান নজর দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত বিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।’



মন্তব্য চালু নেই