সুন্দরবনে বাঘ কমতে কমতে এখন ১০৬

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বাংলাদেশের সুন্দরবনে বিলুপ্তপ্রায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কমতে কমতে ১০৬টিতে এসে ঠেকেছে। অথচ এক বছর আগেও অর্থাৎ ২০১৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৪০টি।

ক্যামেরা পদ্ধতিতে বাংলাদেশ বন বিভাগ পরিচালিত জরিপে চলতি বছরের জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে জরিপ প্রতিবেদন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। বনবিভাগের বরাত দিয়ে এসব তথ্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপি।

বিশেষজ্ঞারা বলছেন, এবার বাঘ গণনায় পায়ের চিহ্ন পদ্ধতির পরিবর্তে অত্যাধুনিক ক্যামেরা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। আর এ কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভে বসবাসরত বাঘের প্রায় সঠিক সংখ্যা জানা গেছে।

ভারতের বন্যপ্রাণী ইনিস্টিটিউটের অধ্যাপক ওয়াইভি ঝালা জরিপের ফল প্রসঙ্গে এএফপিকে বলেন, ‘এটাই বাস্তবতা। ৪৪০ এর যে সংখ্যার কথা আগে বলা হয়েছিল তা রূপকথা ও কল্পনামাত্র। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে সর্বোচ্চ দুইশ বাঘ থাকার মতো অবস্থা রয়েছে।’

বাংলাদেশের সরকারি বন্যপ্রাণী সংরক্ষক তপন কুমার দে জানান, প্রায় এক বছর ধরে চালানো ক্যামেরা জরিপ গত এপ্রিলে শেষ হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ৮৩ থেকে একশ’র মধ্যে। অর্থাৎ গড় হিসেবে বাঘ রয়েছে ১০৬টি।

তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনে আমাদের অংশে কম বেশি ১০৬টি বাঘ রয়েছে। এটা অনেক বেশি সঠিক সংখ্যা।’

মূলত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বসবাস সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে। বাংলাদেশ ও ভারতে সুন্দরবনের মোট ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার রয়েছে। সর্বশেষ বাঘশুমারি অনুযায়ী, ভারতে বাঘ রয়েছে ২ হাজার ২২৬টি। এছাড়া বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, চীন ও মিয়ানমারে বেশ কিছু সংখ্যক এ প্রজাতির বাঘ রয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যার অধ্যাপক ও বাঘ বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান জানান, জরিপে সবচেয়ে বাজে আশঙ্কাটিই নিশ্চিত হলো।

তিনি এএফপিকে বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে আমরা যা আশঙ্কা করছিলাম তার চেয়ে বাঘের সংখ্যা অনেক বেশি কমেছে।’ তার হিসাবে বাঘের সংখ্যা দুইশর বেশি হওয়ার কথা নয় বলেও জানান অধ্যাপক মনির।

অবৈধভাবে পশু শিকার ও বনের কাছাকাছি এলাকায় পরিচালিত নির্মাণ কাজের কারণে বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে জানিয়েছে অধ্যাপক মনির জানান, বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকারকে আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই