আসন্ন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে এবারও লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত দুই প্যানেলে। গত কয়েক বছর ধরে দখলে থাকা নেতৃত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় বিএনপি সমর্থিতরা। আর যেকোনো মূল্যে সুপ্রিমকোর্ট বারও দখল করতে চায় আওয়ামী লীগপন্থীরা।

এর আগে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্ব বিএনপির দখলে থাকলেও বিগত নির্বাচনে দুটির নেতৃত্বই হারায় বিএনপিপন্থীরা। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জয়ী হয় আওয়ামী লীগপন্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগপন্থীরা চায় সুপ্রিমকোর্ট বারেও নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে। আর বিএনপিপন্থীরা চায় যেকোনো মূল্যে নেতৃত্ব দখলে রাখতে।

এই নির্বাচনে ১৪ পদের বিপরীতে চূড়ান্তভাবে ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। মোট ৩৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও পরে দুজন প্রত্যাহার করে নেন।

নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল ও বিএনপি ও সমমনাদের সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের নীল প্যানেল। নির্বাচনে সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেলের সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আজহার উল্লাহ ভুইঁয়া নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপরদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের নীল প্যানেলে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদিন ও সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সাদা প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদে মো. তাহেরুল ইসলাম ও সুরাইয়া বেগম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রমজান আলী শিকদার, সহ-সম্পাদক পদে দুজন হচ্ছেন এ কে এম রবিউল হাসান সুমন ও শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।। এ প্যানেল থেকে সদস্যপদে প্রার্থীরা হলেন- কুমার দেবুল দে, খান মুহাম্মদ শামিম আজিজ, মো. আজিজ মিয়া (মিন্টু), মো. হাবিবুর রহমান (হাবিব), মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, নাসরিন সিদ্দিকা (লিনা) ও সাহানা পারভিন।

নীল প্যানেলের অপরাপর প্রার্থীরা হলেন-সহ-সভাপতি পদে ফাহিমা নাসরিন মুন্নী ও মো. গোলাম মোস্তফা, কোষাধ্যক্ষ পদে নাসরিন আক্তার, সহ-সম্পাদক পদে মো. শহিদুজ্জামান ও মো. ইউসুফ আলী। এ প্যানেল থেকে সদস্যপদে প্রার্থীরা হলেন- মমতাজ বেগম (বিউটি), মো. কামাল হোসেন, মো. নাসির উদ্দিন খান (সম্রাট), নাসির উদ্দিন আহমেদ অসিম, নাসরিন ফেরদৌস, রেজাউল করিম (রেজা)ও এস কে তাহসিন আলি।

নির্বাচনে অংশ নেয়া প্যানেল ও প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকেরা সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে আইনজীবীদের চেম্বারে, বারের সকল হলরুমে, লাইব্রেরি, সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনের প্রবেশ দ্বারে আইনজীবী ভোটারদের মাঝে লিফলেট ও প্যানেল পরিচিতি বিতরণ, প্রার্থীর কার্ড বিলি করে ভোট প্রার্থনা করছেন। এছাড়া ফেসবুক, এসএমএসের মাধ্যমে ও ফোন করেও ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে।

দুই দিনব্যাপী এ নির্বাচন আগামী ২৩ ও ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। সুপ্রিমকোর্ট বারের সুপারিনটেনডেন্ট নিমেষ চন্দ্র দাস জানান, কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদে এ নির্বাচনে ৭টি সম্পাদকীয় ও ৭টি নির্বাহী সদস্যের পদ রয়েছে। গত ১ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ ও দাখিলের সময় ছিল। ১৩ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ছিল। মোট ৩৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও দুজন প্রত্যাহার করায় এখন প্রার্থী রয়েছেন ৩২ জন।

নিমেষ চন্দ্র দাস জানান, সভাপতি পদে ৩ জন, সহ-সভাপতি পদে ৪ জন, সম্পাদক পদে ৪ জন, কোষাধ্যক্ষ পদে ২ জন, সহ-সম্পাদক পদে ৫ জন এবং সদস্য পদে ১৪ জন চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচন সংক্রান্ত সাব-কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ। নির্বাচনে সুপ্রিকোর্টের মোট ৫ হাজার ২৮ জন আইনজীবী ভোটার। ২৩ ও ২৪ মার্চ সকাল ১০ টা থেকে মাঝে ১ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে।