সেই অসহায় বৃদ্ধাকে এবার ঘর দিলেন এএসআই আজাদ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের সনমান্দী পূর্বপাড়া গ্রামের রুপবাহার (৭৫) নামের এক সহায়-সম্বল এবং আত্মীয়-স্বজনহীন বৃদ্ধাকে প্রথমে নিজ জিম্মায় চিকিৎসা করিয়েছেন। এরপর পুলিশের ভবিষ্যৎ তহবিলে (জিপিএফ) নিজের জমানো টাকা তুলে একটি আধুনিক পরিবেশবান্ধব ঘর এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও কিনে দিলেন সোনারগাঁ থানার সেই আলোচিত এএসআই আবুল কালাম আজাদ।

শনিবার (৪ মার্চ) উপজেলার সনমান্দী পূর্বপাড়া গ্রামে সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি সোনারগাঁ থানার এএসআই আবুল কালাম আজাদ ওই এলাকার একটি মসজিদে মুসল্লিদের সঙ্গে জঙ্গি ও মাদকবিরোধী আলোচনা করতে আসেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন ওখানে রুপবাহার (৭৫) নামে এক বৃদ্ধা রোগে-শোকে আক্রান্ত হয়ে একটি ছোট্ট কুঁড়েঘরে মানববেতর জীবনযাপন করছেন।

বৃদ্ধার কোনো আত্মীয়-স্বজন না থাকায় তিনি অনেকটা যেন মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। এ সময় এএসআই আবুল কালাম আজাদ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং পরে নিজ খরচে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান।

এরপর সম্প্রতি এএসআই আজাদ নিজের ভবিষ্যৎ তহবিলের (জিপিএফ) জমানো টাকা তুলে বৃদ্ধার সেই ছোট্ট কুঁড়েঘরের স্থলে একটি আধুনিক পরিবেশবান্ধব ঘর নির্মাণ করেছেন এবং ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও কিনে দিয়েছেন। তা ছাড়া ঘরের সামনে একটি ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। রবিবার (৫ মার্চ) বিকেলে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে ঘরটি বৃদ্ধা রুপবাহারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সোনারগাঁ উপজেলাসহ সারা দেশে পুলিশের ওপর জনগণের যে বিরূপ ধারণা রয়েছে, এএসআই আবুল কালাম আজাদ তা বদলে দিয়েছেন বলে সনমান্দী পূর্বপাড়া গ্রামবাসীর ধারণা। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোমেন বলেন, ”যে কাজটি জনপ্রতিনিধিদের করা উচিত ছিল তা এএসআই আবুল কালাম আজাদ করে দেখিয়েছেন।

তিনি ইতিপূর্বে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় ময়লার স্তূপ থেকে হাত-পা ভাঙা অবস্থায় উদ্ধারকৃত এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধাকে সুচিকিৎসার পর আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তার এসব কর্মকাণ্ডে সারা দেশে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ধারণায় পরিবর্তন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ”

এ প্রসঙ্গে এএসআই আবুল কালাম আজাদ বলেন, ”পুলিশ মানুষের সেবক। আমি এই নীতিতে বিশ্বাস করি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে আমি খুবই আনন্দিত হই। মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আমাকে এই কাজে উৎসাহিত করে। ”-কালেরকন্ঠ



মন্তব্য চালু নেই