সেই হাতিটি উদ্ধারে ব্যর্থ ভারতের বিশেষজ্ঞরা!

ভারতের আসামের সেই বন্য হাতিটি উদ্ধারে কার্যত ব্যর্থ দেশটি থেকে আসা তিন বিশেষজ্ঞ।

শনিবার তৃতীয় দিনে একাধিকার চেষ্টা করেও হাতিটিকে ট্রাঙ্কুলাইজ করতে পারেননি তারা। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য আসামের প্রধান বন কর্মকর্তা (অবসরপ্রাপ্ত) রীতেশ ভট্টাচার্য টেলিফোনে বলেন, ‘হাতিটি উদ্ধারে আমরা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ। আজ (শনিবার) আমরা একটি পোষা হাতিটি নিয়ে ওই হাতিটির কাছে গিয়েছিলাম। ট্রাঙ্কুলাইজ গান (চেতনানাশক ঔষধ) দিয়ে গুলিও ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু বন্য হাতিটি পোষা হাতিকে তাড়া করায় সব ভেস্তে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে (সরিষাবাড়ী উপজেলার কালিবাড়ি চরে) চারিদিকে বন্যার পানি থাকায় চেতনানাশক দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়াও হাতি দেখতে আসা প্রচুর মানুষের কারণে হাতিটিকে ডাঙায় নিয়ে আসাও সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। তবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে হাতি উদ্ধারের পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করবো।’

এদিকে হাতিটি উদ্ধারের পর বাংলাদেশের দায়িত্বে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান কিশোয়াল কনওয়ার শর্মা। তিনি বলেন, হাতিটি আমরা ফেরত নেবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। পরিস্থিতিতে বুঝে আমরা সিধান্ত নেবো। এক্ষেত্রে হাতিটির স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনায় নিয়েই আমরা হাতিটি বাংলাদেশর দ্বায়িত্বে রেখেও যেতে পারি।

হাতি উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের প্রধান জানান, হাতি উদ্ধারে আমাদের কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসছে না। হাতিটি পানিতে থাকার কারণে আমরা তাকে অচেতন করতে পারছিনা।

তিনি জানান, হাতিটি উদ্ধার কাজে সরিষাবাড়ীর যমুনা সার কারখানা কোম্পানি থেকে ক্রেন নিয়ে হাতির অবস্থানরত এলাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অজ্ঞান করার পর হাতিটিকে ক্রেনের মাধ্যমে ট্রাকে উঠিয়ে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে নেয়া হবে।

গত ২৭ জুন হাতির পাল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আসামের বন্য হাতিটি ব্রহ্মপুত্র নদের স্রোতে ভেসে সীমান্ত পার হয়ে কুড়িগ্রামসহ চারটি জেলা ঘুরে এখন জামালপুরের সরিষাবাড়ীর কালিবাড়ির চরে অবস্থান করছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করা ভারতীয় বুনো হাতিটি উদ্ধারের কাজে অংশ নিতে এসেছে ভারতের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

এ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা হাতিটি উদ্ধারে সহযোগিতা করছে। কিন্তু গত তিনদিনেও হাতিটি উদ্ধার সম্ভব না হওয়ায় ওই এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।

ভারতের প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও হাতি বিশেষজ্ঞ ড. কুশল কনওয়ার শর্মা, আসামের প্রধান বন কর্মকর্তা (অবসরপ্রাপ্ত) রীতেশ ভট্টাচার্য ও আসামের গোয়ালপাড়ার ডিএফও সুলেমান চৌধুরী ।



মন্তব্য চালু নেই