সেদিন যাদের রক্তে রঞ্জিত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ

নেতৃত্ব বিনাসের ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা। হামলার ধরন ও ব্যাপকতা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ওইদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা নিয়েই গ্রেনেড হামলা করে ঘাতকরা।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও ২১ আগস্টের সেই গ্রেনেড হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ নেতাকর্মী। আর এ হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান। আহত হওয়ার পর প্রায় দেড় বছর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে যান আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ও প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ।

নারকীয় ওই গ্রেনেড হামলায় নিহত অন্যরা হলেন- মোসতাক আহম্মদ সেন্টু, শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), হাসিনা মমতাজ রীনা, রিজিয়া বেগম, রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, লিটন মুন্সী, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন সর্দার, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।

হামলায় গুরুতর আহত হন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি (তৎকালীন প্রেসিডিয়াম সদস্য) জিল্লুর রহমান, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক, ঢাকার সাবেক মেয়র (প্রয়াত) মো. হানিফ, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, কাজী জাফর উল্লাহ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা আখতার, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মল্লিকসহ ৫ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ আহত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেয়ার মধ্যে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। অনেকে শরীরে এখনও গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন।

ওই দিনের গ্রেনেড হামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাম কান মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরেও বাম কানের শ্রবণশক্তি স্বাভাবিক হয়নি বলে জানা যায়।



মন্তব্য চালু নেই