সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যে হতাশ ইনুপন্থীরা : ক্ষমা চাওয়ার অহ্বান

জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যে হতাশ কুষ্টিয়ার ইনুপন্থী জাসদের নেতা-কর্মীরা। সেই সঙ্গে এমন বক্তব্যের জন্য সৈয়দ আশরাফকে ক্ষমা চাওয়ারও আহ্বান জানান তারা।

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী বর্ধিত সভা ও কর্মশালার সমাপনী বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) ‘হঠকারী’ সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার জন্য দায়ী করেন সৈয়দ আশরাফ।

সেই সঙ্গে তিনি হাসানুল হক ইনুকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এদের একজনকে (হাসানুল হক ইনুকে) আবার মন্ত্রীত্বও দেয়া হয়েছে। যার প্রায়শ্চিত্ত আওয়ামী লীগকে আজীবন করতে হবে।

এসময় মন্ত্রী স্বাধীনতা পরবর্তী জাসদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা জাসদ গঠন করে। মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। তারা এই সফল মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছিল।

বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার আগেই দেশকে ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা করেছিল।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন বক্তব্যর সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, যখন দেশব্যাপী উগ্রবাদী মৌলবাদীরা গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে সেই সময় জাসদ ও মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে নিয়ে তার ( সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম) মত একজন প্রাজ্ঞ নেতার এ ধরনের মন্তব্য জঙ্গিগোষ্ঠীকে অপরাধ কর্মকাণ্ড সংগঠিত করতে আরো উৎসাহিত করবে। তাই তিনি সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।

কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন বলেন, ইতিহাস বিবেচনা করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ থেকে অনেক বছর আগে ১৪ দল গঠন করেছেন। এখন এই ধরনের বক্তব্য প্রদান করার অর্থ হলো ১৪ দলের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করা। যা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করবে।

জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায় বলেন, জাসদের একজনকে মন্ত্রী করায় আওয়ামী লীগের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে না কি না সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই ভালো জানেন। জাসদ সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। যিনি এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করেছেন তিনি গণতান্ত্রিক মূল্যেবোধের মানুষ কি না এ নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, সব দিক বিবেচনা করেই তো জাসদকে ১৪ দলে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল। তাহলে এখন কেন এই ধরণের বক্তব্য আসছে। সরকারে রেখে এখন এ ধরনের মন্তব্য করা কোন ভাবেই সমীচীন নয় বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ,স,ম আক্তারুজ্জামান মাসুম বলেন, আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যেটা করেছে সেটা ভুল ছিল। জাসদের উচিত তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া।



মন্তব্য চালু নেই