সোমবার মহালয়া

সোমবার সকাল ৬টায় শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ মহালয়া। কৈলাশ থেকে দুর্গা পিতৃগৃহে আগমন করবেন। অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানাবে ভক্তকুল।

চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দশভুজা শক্তিরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে অধিষ্ঠান করবেন দেবী দূর্গা। মহালয়ার দিন থেকেই দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনা শুরু হয়। মহালয়া থেকে দেবীপক্ষের শুরু। মহালয়ার ষষ্ঠ দিন অর্থাৎ আগামী ১৮ অক্টোবর বোধনের মধ্য দিয়ে পাঁচদিনব্যাপী দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটবে। তবে মূলত মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয় দেবী দুর্গার আগমনধ্বনি।

এ উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ শুরু হবে। দশভুজা শক্তিরুপী দূর্গা প্রতিটি মণ্ডপে অবস্থান করবেন। সে লক্ষ্যে প্রতিটি মণ্ডপে সোমবার ভোর ৬টা থেকে চন্ডিপাঠ আর অমাবশ্যায় হৃদয়ে নাচন তুলে ঢাকে পড়বে কাঠি।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপে সকাল ৬টায় মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মিশনে চণ্ডীপাঠ ও শারদীয় আগমনী সঙ্গীতের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মিশনের সংস্কৃতি ভবনের বিবেকানন্দ হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ বলেন, মহালয়ার অর্থ হচ্ছে, মহান আলোয় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে আবাহন। দুটি পক্ষ রয়েছে- একটি হলো পিতৃপক্ষ, অন্যটি দেবীপক্ষ। অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের শেষ হয়, আর প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয় দেবীপক্ষের। শরৎকালের অমাবস্যার পর প্রতিপদ চাঁদের জন্ম হয়। অমাবস্যা কেটে আলোর দিকে যায়। সেই হলো মহালয়া। সনাতন ধর্মে বলা হয় পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্তলোকে আসেন। মৃত আত্মীয়-পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশে জল-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়। এরপর শুরু হয় দেবী পক্ষের। এই দেবীপক্ষকে বলা হয় সবচেয়ে শুভ দিন। এ সময় সব ধরণের শুভ কাজ সম্পন্ন করা যায়।

পুরাণে আছে দুর্গোৎসবের তিন পর্ব যথা: মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহালয়ায় পিতৃপক্ষ সাঙ্গ করে দেবীপক্ষের দিকে যাত্রা শুরু হয়। অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন।

সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। যার ফল হচ্ছে রোগ, শোক, হানাহানি-মারামারি বাড়বে। আর দেবী স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি) চড়ে; যার ফল মড়ক। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ, মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে।



মন্তব্য চালু নেই