সৌদি আরবে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা, ওমরাহ করবেন আজ

সৌদি আরবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ বিন আবদুল আজিজ তাকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার দেয়। এ সময় তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

পরে ক্রাউন প্রিন্স নায়েফ প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দর থেকে কিং ফয়সাল প্যালেসে নৈশভোজে নিয়ে যান। সেখান থেকে জেদ্দা কনফারেন্স প্যালেসে যাবেন শেখ হাসিনা। জেদ্দায় সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি।

বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সফরে বিকালে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা। সৌদি বাদশাহ সালমান দায়িত্ব নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের এই তেলসমৃদ্ধ দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর।

ছোট বোন শেখ রেহানা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এই সফরে শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করীম, বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জনলুন আবেদীনও রয়েছেন সফরসঙ্গীদের মধ্যে।

এছাড়া বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, এফসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সভ-সভপাতি শফিউল ইসলাম, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।

শেখ হাসিনা রাতেই জেদ্দা থেকে মক্কা গিয়ে ওমরাহ পালন করবেন এবং সেখানে ফজরের নামাজ আদায় করবেন।

ওমরাহ শেষে শনিবারই মক্কা থেকে জেদ্দা ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকালে জেদ্দা থেকেই তিনি রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স এবং বাংলাদেশ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

রোববার জেদ্দার আল আন্দালুসে আল সালাম প্রাসাদে সৌদি বাদশাহর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।

সেখানে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শ্রম বাজার সম্প্রসারণ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে সৌদি সহায়তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা এবং হজ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই শীর্ষ নেতা মত বিনিময় করবেন। এসব আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স, উপ-প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।

সরকারি হিসাবে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এই হিসাবে সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার।

প্রধানমন্ত্রী সোমবার সকালে মদিনার উদ্দেশ্যে জেদ্দা ত্যাগ করবেন এবং মদিনায় পৌঁছে হিলটন হোটেলে অবস্থান করবেন। সেখানে মসজিদে নববীতে আছর এবং মাগরিবের নামাজ আদায় করে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা জিয়ারত করবেন শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকালে মদীনার প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছনোর কথা রয়েছে তার। সর্বশেষ ২০১৩ সালের নভেম্বরে ওমরাহ করতে সৌদি আরবে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিডিনিউজ



মন্তব্য চালু নেই