স্কুল ফি বৃদ্ধি: অধিদপ্তরের যেনতেন প্রতিবেদন

রাজধানীর বেসরকারি স্কুলে ছাত্র বেতন ও ফি নিয়ে চলছে অরাজকতা। যার যার ইচ্ছামতো ফি বাড়িয়ে অভিভাবকদের ওপর চাপ তৈরি করেছে বিভিন্ন স্কুল। এ নিয়ে অভিভাবকদের আন্দোলনের পর অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধের পাশাপাশি ফি কত টাকা বাড়ানো যাবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা জারির কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়ের পরও জারি করা হয়নি সেই নির্দেশনা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, কোন স্কুলে কত টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য না থাকায় এই নির্দেশনা জারি করা যাচ্ছে না। অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)কে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বললেও তারা দিয়েছে কেবল সাতটি স্কুলের তথ্য। এ কারণে অধিদপ্তরের কাছে রাজধানীর সব স্কুলের তথ্য নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন চেয়েছে মন্ত্রণালয়।

নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের পর রাজধানীর বেসরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের বেতনসহ নানা ফি বাড়ানো হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেড়গুণ বা দ্বিগুণ করারও অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। অতিরিক্ত ফি কমানোর দাবিতে নানা কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় ১৭ জানুয়ারি। সেই সঙ্গে কী পরিমাণ ফি বাড়ানো হয়েছে, সে বিষয়ে মাউশিকে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

২৮ জানুয়ারি মাউশি প্রতিবেদন জমা দেয় মন্ত্রণালয়ে। রবিবার অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বসেন। কিন্তু কেবল সাতটি স্কুল নিয়ে কেন এই প্রতিবেদন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কর্মকর্তারা। এরপর তা ফেরত পাঠানো এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সবগুলো স্কুলের বিষয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত’ প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

মাউশিকে স্কুল ফির বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ রাখতে স্কুলগুলোকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় কত টাকা ফি বাড়ানো যাবে, তা সরকার নির্ধারণ করে দেবে বলে জানানো হয়।

সরকারের নির্দেশনা মেনে কিছু স্কুল অতিরিক্ত টাকা নেয়া বন্ধ রাখলেও কেউ কেউ বর্ধিত হারেই শিক্ষার্থীদের টাকা দিতে বাধ্য করছে। কিন্তু প্রতিবেদন না পাওয়ায় এই বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘অতিরিক্ত ফি নেয়া স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের কাছে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে’।

কেবল সাতটি স্কুলের বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে, জানতে চাইলে মাউশির কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যোগাযোগ করা হলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বৈঠকে থাকার কথা জানিয়ে এ বিষয়ে কিছু বলেননি।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন জাতীয় বেতনকাঠামোর পর বেসরকারি স্কুলেও শিক্ষক বেতন বৃদ্ধির কারণে ছাত্র বেতন এবং অন্যান্য ফি বাড়ানোর ব্যাপারে একটি নীতিমালা করা হবে। এর মধ্যে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি আদায় করে ফেলেছে তাদের ওই হারের সাথে সমন্বয় করতে নির্দেশনা থাকবে।ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই