স্ত্রী মিতুকে হারিয়ে যে ভাবে দিন কাটছে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুলের

স্ত্রী মিতুকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ। বড্ড একাকী দিন কাটছে সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আকতারের। সংসারে তাদের দুটি সন্তান। তারাও এখন কেবলই মাকে খুঁজে ফিরছে এ ঘর ওই ঘর। চট্টগ্রামের ব্যস্ততম এলাকা জিইসি মোড়। এখানকার মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল সংলগ্ন ওআর নিজাম রোড আবাসিক এলাকার ১ নম্বর ভবন ইকুইটি সেন্ট্রিয়াম। এই অ্যাপার্টমেন্টের সেভেন ডি-তে থাকতেন বাবুল আকতার ও তার স্ত্রী সন্তান। স্ত্রী মিতুকে হত্যার পর পরই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তাকে সান্ত্বনা দিতে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের বাসা ছেড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঢাকার খিলগাঁওয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে। সেখানে তিনি রয়েছেন নিজের মতো। চট্টগ্রামের বাসায় এখন ঝুলছে তালা। সেখানে নেই কেউ। অথচ কদিন আগেও এই বাসায় হৈহুল্লোড় ছিল।

বাবুল আকতারের পরিবারের সদস্যরা জানান, চট্টগ্রামের বাসায় এখনও সাজানো রয়েছে থরে থরে বই। দেয়ালে ঝুলছে মিতু ও বাবুল আকতার দম্পতির ছবি। পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে সম্প্রতি ঢাকায় যোগদান করতে গিয়েছিলেন বাবুল আকতার। কথা ছিল একটু গুছিয়ে তারপর সন্তানদের নিয়ে যাবেন। বাবুল আকতারের স্ত্রী মিতু প্রায়ই বলতেন, এই চট্টগ্রাম ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না। এটা যেন আমার নিজের শহর। হাটহাজারী, কক্সবাজার শেষে নগরীতে পদোন্নতি পেয়ে শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছিলেন বাবুল। তার একের পর এক অভিযানে যখন কোণঠাসা হচ্ছিল অপরাধী চক্র তখন কোনোদিনও ভাবতে পারেননি নিজের আঘাত আসবে কিনা পরিবারের ওপর। অবশ্য মিতু প্রায়ই এই নিয়ে উদ্বেগে থাকতেন। মিতুর বাবা ছিলেন পুলিশের পরিদর্শক। বর্তমানে অবসরে রয়েছেন। সরকারের এতো বড় একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার স্ত্রী হওয়ার পরও মিতুর ছিল না কোনো অহংকার। কারণ তার স্বামী নিজেই যে চলতেন অত্যন্ত সাদামাটাভাবে!

বাবুল আকতারের ফুফাতো ভাই ওয়াহিদ বলেন, স্ত্রীকে হারিয়ে বাবুল আকতার কিছুটা নিজের মতো রয়েছেন। তাকে আমরা তার মতো থাকতে দিচ্ছি। প্রায় সময় চুপচাপ রয়েছেন। চোখের জল ফেলছেন। সন্তানদের আঁকড়ে ধরছেন বুকে। বাবুল আকতারের সন্তান মাহি ঘটনার দিন দৌড়ে বেঁচে যায় ঘাতকদের হাত থেকে। সে মায়ের মৃত্যু খুব কাছ থেকে দেখেছে। এই ঘটনার পর বারবারই মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে পরিবারের সদস্যদের বলছেন, ‘সেদিন বাবা থাকলে ওরা মাকে মারতে পারতো না।’এদিকে মিতু হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী সদস্যরা এখন ‘কিপ সাইলেন্ট’ নীতিতে। এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।-এমজমিন



মন্তব্য চালু নেই