স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ কাজে আসেনি, দেড় হাজার কোটি টাকা গচ্চা

স্থানীর সরকার শক্তিশালীকরণে বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগ কাজে আসেনি। বরং গৃহীত প্রকল্পের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা গচ্চা গেছে।

লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট (এলজিএসপি) শীর্ষক প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষেদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সচিবদের প্রশিক্ষণ প্রদান। কিন্তু ৯০ শতাংশ ব্যক্তিই এ প্রশিক্ষণে অংশ নেননি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। সম্প্রতি মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংস্থাটি।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা স্থানীয় প্রয়োজনের চাইতে অর্থ বরাদ্দের দিকে বেশি নজর দেন। ফলে এলজিএসপি প্রকল্পের অধিকাংশ অর্থই ভৌত অবকাঠামো খাতে ব্যয় হয়েছে। অনেক ইউপিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা চরম অনিহা দেখিয়েছেন।

এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ড সভা আয়োজন, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় অনেক ইউনিয়ন পরিষদে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ওয়ার্ড সভা পরিচালনার জন্য পৃথক কোনো বরাদ্দও নেই।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক স্বপন কুমার সরকার বলেন, সার্বিকভাবে প্রকল্পটি সফল হয়েছে, তবে কিছু ক্ষেত্রে ত্রুটি ছিল। প্রথম প্রকল্প হওয়ায় সেটি হয়েছে। এ কারণে এলজিএসপি-২ প্রকল্পে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়েছে।

আইএমইডি বলছে, প্রকল্পটির নকশার ক্ষেত্রেই দুর্বলতা ছিল। প্রকল্পে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালকদের (ডিডিএলজি) বিভিন্ন ইউপি পরিদর্শনের কথা থাকলেও খুব কম জেলায় ডিডিএলজি পদায়িত ছিল। এছাড়া কোনো ডিএফ (ডিস্ট্রিক্ট ফেসিলিটেটর) না থাকায় প্রকল্পের মনিটরিং ব্যাহত হয়।

এ প্রকল্পের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা তেমনভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রের রিপোর্ট আদান প্রদান নিয়মিত ছিল না। প্রকল্পে পুরস্কার বা তিরস্কারের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ইউপিগুলোর মধ্যে ভালো কাজ করার প্রবণতা দেখা যায়নি।

প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়নে ১৪টি ক্ষেত্রে দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছে আইএমইডি। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পে দরিদ্র জনগোষ্ঠী নির্বাচনে অনিয়ম, ভাতা প্রদানে বিলম্ব ও টাকার বিনিময়ে ভাতা প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া গেছে।

উল্লেখ, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৪২১ কোটি ৪৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রকল্প শুরুর পর ব্যয় কমিয়ে ১ হাজার ৩৩১ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা করে প্রকল্প সংশোধন করা হয়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, মাঝপথে বিশ্বব্যাংকের ২ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ১৬০ কোটি টাকা) ঋণ সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রকল্পটি ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়।খবর: জাগোনিউজ।



মন্তব্য চালু নেই