স্পেন ১৭-১ ইংল্যান্ড !

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের ১-০ গোলের জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ‘অল-মাদ্রিদ’ ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে। আগামী ২৮ মে মিলানের ফাইনালে এগারোতম শিরোপার লক্ষ্যে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ।

অন্যদিকে আরো একবার লা লিগার ক্লাবের কাছে হেরে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার নকআউট পর্ব থেকে বিদায় নিল প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাব। অবশ্য ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় গত কয়েক বছর ধরেই এটা নিয়মিত ঘটনা।

২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার নকআউট পর্বে ১৮ বার মুখোমুখি হয়েছে স্পেন ও ইংল্যান্ডের ক্লাব। এর মধ্যে মাত্র একবার পরের পর্বে উঠতে পেরেছে ইংল্যান্ডের ক্লাব! অর্থাৎ স্পেন ১৭-১ ইংল্যান্ড!

বৃহস্পতিবার রাতে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় আরেকটি স্প্যানিশ-ইংলিশ ম্যাচ আছে। অ্যানফিল্ডে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে ভিয়ারিয়াল ও লিভারপুল। প্রথম লেগে ভিয়ারিয়ালের মাঠ থেকে ১-০ গোলে হেরে ফিরেছে ‘অল রেড’রা। লিভারপুল ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলে ১৭-১ কিন্তু ১৮-১ হয়ে যাবে!

এই মৌসুমেই চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে বার্সেলোনার কাছে হেরে বিদায় নেয় ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল। নিজেদের মাঠে প্রথম লেগে ২-০ গোলে হারের পর বার্সেলোনার মাঠে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরে ঘরে ফেরে ‘গানার্স’রা।

চ্যাম্পিয়নস লিগের আগের মৌসুমেও শেষ ষোলোতে দুই লেগ মিলিয়ে বার্সেলোনার কাছে ৩-১ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল এবার প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল খেলা ম্যানচেস্টার সিটি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ২০১৩-১৪ মৌসুমের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও চেলসি। অ্যাটলেটিকোর মাঠে গোলশূন্য ড্রয়ের পর স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফিরতি লেগে পিছিয়ে পড়েও ৩-১ গোলের নাটকীয় জয়ে ফাইনালে উঠেছিল স্প্যানিশ ক্লাবটি। একই মৌসুমে শেষ ষোলোতে দুই লেগ মিলিয়ে বার্সেলোনার কাছে ৪-১ গোলে হেরেছিল ম্যানচেস্টার সিটি।

২০১২-১৩ চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্রয়ের পর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ২-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল। দুই লেগেই নিজের প্রাক্তন ক্লাবের বিপক্ষে একটি করে গোল করেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে গোল করার পর দুই হাত ওপরে তুলে ইউনাইটেড-সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।

ওই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের তখনকার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চেলসিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ইউরোপিয়ান সুপার কাপের শিরোপা জিতেছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাও।

২০১১-১২ মৌসুমে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার নকআউট পর্বে স্প্যানিশ-বাধা অতিক্রম করেছিল ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠ থেকে ১-০ গোলে জিতে ফিরেছিল তারা। তবে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফিরতি লেগে ৪৩ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। কিন্তু দুই অর্ধেরই যোগ করা সময়ে দুটি গোল করে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলের জয়ে মিউনিখের ফাইনালে ওঠে চেলসি। ফাইনালে টাইব্রেকারে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে শিরোপাও জিতেছিল চেলসিই।

একই মৌসুমে ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোতে দুই লেগ মিলিয়ে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের কাছে ৩-২ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তার আগে একই প্রতিযোগিতার শেষ বত্রিশের লড়াইয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল আরেক ইংলিশ ক্লাব স্টোক সিটি।

২০১০-১১ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল বার্সেলোনা। সেবার শেষ ষোলোতে বার্সেলোনার কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল আর্সেনাল। কোয়ার্টার ফাইনালে দুই লেগ মিলিয়ে টটেনহামকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।

২০০৯-১০ মৌসুমে আর্সেনালকে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করেছিল বার্সেলোনা। দুই লেগ মিলিয়ে বার্সা জিতেছিল ৬-৩ গোলে। একই মৌসুমে ফুলহামকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তার আগে আরেক ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলকে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করে ফাইনালে উঠেছিল অ্যাটলেটিকো। সেমিফাইনালের দুই লেগ ২-২ সমতা থাকলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে ফাইনালের টিকিট পেয়েছিল স্প্যানিশ ক্লাবটি।

২০০৮-০৯ চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনা-চেলসি সেমিফাইনালের প্রথম লেগ ন্যু ক্যাম্পে শেষ হয়েছিল গোলশূন্য ড্রতে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফিরতি লেগে নবম মিনিটে গোল করে ৯০ মিনিট পর্যন্ত সেটা ধরে রেখে ফাইনালের স্বপ্নই দেখছিল চেলসি। কিন্তু যোগ করা সময়ে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার গোলে ম্যাচ শেষ হয় ১-১ গোলে। ইনিয়েস্তার মূল্যবান অ্যাওয়ে গোলটিই বার্সেলোনাকে পৌঁছে দিয়েছিল রোমের ফাইনালে।

রোমের স্ট্যাডিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে আরেক ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপাও জিতেছিল বার্সেলোনাই। ফাইনালে হেডে চোখ ধাঁধানো এক গোল করেছিলেন লিওনেল মেসি।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল।



মন্তব্য চালু নেই