স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের

মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্তে ইনকোয়ারি অ্যাক্টের আওতায় স্বাধীন কমিশন গঠন করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের প্রতি দাবি জানিয়েছে ছাত্র-অভিভাবক সমন্বয় ফোরাম।

শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সমন্বয়ক আসিফ বিন ত্বাকী।

প্রশ্নফাঁসের ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য কমিশন ফর ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ অনুযায়ী একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসিফ বিন ত্বাকী বলেন, ‘আমাদের কাছে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনার পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। স্বাধীন কমিশন গঠন করা হলে সেসকল তথ্য প্রমাণপত্র আমরা ওই কমিশনে দাখিল করব।’

তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগীয় কমিশন অনেক দীর্ঘমেয়াদী সময় নিয়ে গঠিত হয় বলে আমরা সরাসরি ইনকোয়্যারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি’।

সংবাদ সম্মেলনে ত্বাকী আগামীকাল রোববারের নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টায় আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেব।’

এ আন্দোলনকে বেগবান করতে সারা দেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থদেরকে ক্লাস বর্জন করে অবস্থান ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানান তিনি।

‘মেডিকেলে যারা ভর্তি হয়েছে আপনাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে কিনা’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ত্বাকী বলেন, ‘সারা দেশে প্রায় ৮৪ হাজার পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আমাদের আন্দোলন ৮৪ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নয়। এবার প্রশ্নবিদ্ধভাবে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আন্দোলন প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে।’

এ আন্দোলনে কারো ইন্ধন রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। এখানে কারও ইন্ধন নেই। ইন্ধনের সন্দেহ থাকলে যে কোউ তদন্তও করতে পারেন।’

সংগঠনের অপর এক সমন্বয়ক এবং অভিভাবক অধ্যাপক আশরাফ কামাল বলেন, ‘সমস্যা যেমন আছে, সমস্যা সমাধানে আলাপ আলোচনার বিষয়টিও রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক সংসদ সদস্যের মাধ্যমে আমাদেরকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সংসদ সদস্যের নাম আমি বলতে চাচ্ছি না। আদের আহ্বান অনুযায়ী আলোচনায় বসার জন্য আমরাও ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে যাবো। কিন্তু আমরা কোনো রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসবো না। মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতিতে আমরা বৈঠকে বসবো। অন্যথায় আমরা সে বৈঠকে বসবো না।’

নিজেদের অবস্থান বিবেচনা করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি আইজীবী প্যানেল গঠন করেছেন বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ও ভর্তি পরীক্ষার আসল প্রশ্ন মিলিয়ে দেখানো হয়। এছাড়া, তাদের দাবি অনুযায়ী পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপাওয়া এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোনের কথোপকথনের রেকর্ডও বাজিয়ে শোনানো হয়। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন এক সাংবাদিকের মাধ্যমে তারা সরবরাহ করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এ সময় আন্দোলরত শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, ছাত্র ফ্রন্ট, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই