স্বাধীন রাষ্ট্র হতে চায় লন্ডন!

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে যুক্তরাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ রায় দিলেও লন্ডনবাসীর অবস্থান ভিন্ন। তারা জোটের সঙ্গেই থাকতে চান।

গণভোটের ফলাফল ঘোষণার পরদিনই যুক্তরাজ্য থেকেই বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবি উঠেছে লন্ডনে। মেয়র সাদিক খানের কাছে জমা পড়েছে ১ লাখ মানুষের স্বাক্ষরিত এই দাবি।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের বরাবর এই পিটিশন দাখিল করেছে ভোটাররা। মেয়রকে তারা অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন লন্ডনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে ইইউতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।

গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত গণভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ইইউ ছাড়ার পক্ষ সংখ্যাগরিষ্ঠ মত গেলেও রাজধানী লন্ডনের ভোটাররা থাকার পক্ষেই রায় দিয়েছেন।

এখানে ‘থাকার পক্ষে’ পড়েছে ৬০ শতাংশ ভোট, ‘ত্যাগ করার পক্ষ’ পেয়েছে ৪০ শতাংশ।

তবে পুরো ইংল্যান্ডে ১ কোটি ৫২ লাখ ভোটার ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। বিপরীতে থাকার পক্ষে ভোট পড়েছে ১ কোটি ৩৩ লাখ। অর্থাৎ মোট ভোটারের হিসাবে ইইউ ছাড়া পক্ষে ভোট ৫২% আর থাকার পক্ষে ৪৮%।

গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লেবার পার্টির হয়ে মেয়র নির্বাচিত সাদিক খান নিজে ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচারে ছিলেন। ভোটের ফল প্রকাশের পর শুক্রবার সকালে লন্ডনের ৮ হাজারের বেশি নাগরিক তার কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন, যাতে ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে তাকে ব্যতিক্রমী ওই উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। আবেদনের উদ্যোক্তা জেমস ও মেলে লেখেন, লন্ডন একটি আন্তর্জাতিক শহর। আমরা ইউরোপের প্রাণ হিসেবে থাকতে চাই।

এজন্য মেয়র সাদিক খানকে লন্ডনের স্বাধীনতা ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, মেয়র সাদিক, আপনি কি প্রেসিডেন্ট সাদিক হওয়াটাই বেছে নেবেন না? এটাকে সত্যি করুন…!

অবশ্য ভোটের ফল প্রকাশের পরই আসন্ন বিপর্যয়ের সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। পাউন্ডের দাম পড়ে গেছে ১০ শতাংশ যা গত ৩২ বছরে দেখেনি ব্রিটিশরা।

জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে দ্বিতীয়বার গণভোট আয়োজনের দাবি জোরদার হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০ লক্ষাধিক লোকের আবেদন পড়েছে।

তাছাড়া ফলাফল ঘোষণার আট ঘণ্টা পর গুগলের প্রশ্নোত্তর খোঁজার প্রবণতা দেখে বুঝা যাচ্ছে, অনেক ব্রিটিশ ‘ইইউ কী’ এবং এই জোট থেকে বেরিয়ে গেলে লাভ-ক্ষতিই বা কী হতে পারে তা না বুঝেই ‘লিভ’ এর পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। এখন তারা আফসোস করছেন। এবং বলছেন, দ্বিতীয়বার ভোট দেয়ার সুযোগ থাকলে অবশ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পক্ষেই ভোট দিবেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই