হবিগঞ্জে ৪ শিশু খুনের মূল রহস্য? না জানলে এখনই জেনে নিন

উপজেলায় সুন্দ্রাটেকি গ্রামের চার শিশু পাঁচ দিন আগে নিখোঁজ হয়।

বুধবার সকালে বাড়ির পাশে ঈসা বিল এলাকায় তাদের মাটিচাপা দেওয়া লাশ পাওয়া যায়।

এরা হলো স্থানীয় আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) এবং আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।
মনির সুন্দ্রাটেকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে এবং তার দুই চাচাতো ভাই শুভ ও তাজেল একই স্কুলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেনিতে পড়ত। আর তাদের প্রতিবেশী ইসমাইল ছিল সুন্দ্রাটেকি মাদ্রাসার ছাত্র।

এদিকে নিহতদের লাশ সন্ধ্যায় তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মনিরের বাবা আবদাল মিয়া তালুকদার বলেন, মাসখানেক আগে গাছ কাটা নিয়ে একই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের সঙ্গে তাদের বিরোধ ও সংঘর্ষ হয়।

এর জেরে আব্দুল হাই ও তার পক্ষের লোকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশীষ দাশ বলেন, চার শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘঅতের চিহ্নও রয়েছে।

বাহুবল মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সরেজমিনে সুন্দ্রাটেকি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারিত ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম। তাদের সঙ্গে শোকাহত এলাকার মানুষ।

গত শুক্রবার বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয় এই চার শিশু। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাদের সন্ধান না পেয়ে রাতে উপজেলার সব এলাকায় মাইকিং করেন স্বজনরা।

শনিবার দুপুরে শুভর বাবা ওয়াহিদ মিয়া বাহুবল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, বুধবার সকালে ঈসা বিল এলাকায় মাটির স্তূপের নিচে লাশের অংশ বেরিয়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।

পরে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

সিলেট রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই সময় হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিলে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন তিনি।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেন বলেন, “সকালে লাশ পাওয়ার খবর পেয়েই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বাহুবলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।”

পুলিশ সুপার জয়দেব ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, চার শিশুকে অন্য কোথাও হত্যার পর লাশ সেখানে এনে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

“প্রাথমিকভাবে এটা শত্রুতা থেকে হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানতে পারব।”

দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের ধরা হবে বলে আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার।



মন্তব্য চালু নেই