হলুদের ৭টি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

হলুদের প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ও উচ্চমাত্রায় সেবনের ফলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। হলুদ অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান নয় বলে এর দৈনিক গ্রহণের মাত্রা নির্দিষ্ট নেই। যদিও পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক কারকিউমিন গ্রহণের মাত্রা ৪০০-৬০০ মিলিগ্রাম। পিত্তপাথরের সমস্যা আছে যাদের তাদের হলুদ গ্রহণ করা ঠিক নয়। যদি আপনি অ্যাসপিরিন সেবন করে থাকেন তাহলে হলুদ সেবনের পূর্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন, কারণ এটি অ্যান্টি প্লেটলেট এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও অস্ত্রোপাচারের মানুষদের হলুদ এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ। আসুন তাহলে জেনে নিই হলুদের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে।

১। পেট খারাপ

হলুদের নানাবিধ উপকারিতার জন্য প্রতিদিন কয়েক টেবিলচামচ হলুদ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়ে থাকে। সত্যি বলতে এত অধিক পরিমাণে হলুদ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই। যদি আপনি দীর্ঘদিন ও অধিক পরিমাণে হলুদ সেবন করেন তাহলে ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা কারো কারো ক্ষেত্রে ঘাম হতে পারে। তাই এই ধরণের সমস্যায় হলুদ গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দিন বা হলুদ গ্রহণ এড়িয়ে যান।

২। জরায়ুর উদ্দীপনা

হলুদ ইউটেরাইন স্টিমুলেন্ট হিসেবে কাজ করে যা মিনসট্রুয়াল ফ্লোকে উৎসাহিত করে। গর্ভবতী নারী ও দুধ পান করান যে মায়েরা তাদের হলুদ গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রয়োজন যাতে সন্তানের কোন ক্ষতি না হয়।

৩। রক্তক্ষরণ

যেহেতু হলুদ রক্ত জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয় তাই এর সেবনে রক্তক্ষরণ হতে পারে। অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট ও অ্যান্টিপ্লাটিলেট ঔষধ সেবনের সময় হলুদ গ্রহণ করা এড়িয়ে যেতে হবে।

৪। কেমোথেরাপির প্রভাব কমিয়ে দেয়

গবেষণায় দেখা গেছে হলুদের কেমোথেরাপি ইফেক্ট থাকতে পারে। তাই কেমোথেরাপির চিকিৎসার সময় হলুদ ব্যবহার করা বা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়।

৫। অ্যালার্জি

কিছু মানুষের হলুদের অ্যালার্জি থাকে। অন্য অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানের মত খাওয়ার পর পরই অ্যালার্জির লক্ষণ প্রকাশ পায়না। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তারা বহুবছর যাবতই তরকারীর সাথে হলুদ গ্রহন করলেও কোন সমস্যা দেখা যায় না। কিন্তু তারাই যখন প্রতিদিন সাপ্লিমেন্ট হিসেবে হলুদ গ্রহণ করা শুরু করে তখন কিছু দিন বা এক সপ্তাহ পরেই অ্যালার্জির লক্ষণ প্রকাশ পায়। হলুদের অ্যালার্জির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে স্কিন র‍্যাশ হওয়া। এরকম লক্ষণ প্রকাশ পেলে হলুদ গ্রহণে বিরতি দিয়ে দেখুন। যদি উপসর্গ কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে এটা হলুদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে হয়েছে। তাই আর হলুদ গ্রহণ করাটা আপনার উচিৎ হবেনা।

৬। হাইপোগ্লাইসেমিয়া

হলুদ ডায়াবেটিকে আক্রান্তদের ব্লাড সুগারের মাত্রা কমাতে পারে এবং যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট প্রতিরোধ করতে পারে। অর্থাৎ হলুদের রক্তের চিনির পরিমাণ কমানোর প্রচুর ক্ষমতা আছে। তাই ডায়াবেটিস নেই এমন মানুষদের এবং দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর হলুদ গ্রহণ করা হয় তাদের ক্ষেত্রে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। ডায়াবেটিসের ঔষধ খাচ্ছেন এমন মানুষদের ও বেশি পরিমাণে হলুদ গ্রহণ করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।

৭। কিডনি পাথর

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, হলুদ অক্সালেটের বিপাক পরিবর্তিত করে দেয়। অক্সালেট কিডনি পাথর তৈরি করে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিতে থাকলে হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

তাই মাত্রাতিরিক্ত হলুদ সেবন না করাই ভালো। হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ ও মাত্রা অনুযায়ী সেবন করুন।



মন্তব্য চালু নেই