হাওরের কান্না এখন রাজধানীর বাতাসে

হাওরের কান্না ভাসছে এখন রাজধানীর বাতাসে। বন্যা আর ফসলহানির কারণে কর্মহীন মানুষ পেটের দায়ে ছুটে এসেছে ঢাকায়। কাজের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছে পুরো শহর। কেউ অর্ধাহারে, কেউ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। কেউ আশ্রয় নিয়েছে বস্তিতে; কেউ খোলা আকাশের নিচে।

ভুক্তভোগীরা জানান, হাওরের যেদিকে দুচোখে শুধু পানি আর পানি। কোথাও ফসল নেই। এ সময় ধানকাটার ধুম পড়ে, বেশি টাকা দিয়েও শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যায় না। আর এখন উল্টো অবস্থা। শ্রমিকরা বেকার। কেউ তাদের ডাকছে। চারদিকে নিস্তব্ধতা, হাহাকার। ফসল হারিয়ে গৃহস্থরা একন ত্রাণের জন্য ছুটছে এখান থেকে সেখানে।

ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ এসেছে রাজধানীতে। ছোটখাট গৃহস্থরাও এখন দিনমজুর। কেউ আবার মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো, তারাও আজ শ্রমিক, রিকশাচালক। তবে কেউ কেউ কাজ খুঁজে নিলেও অনেকেই থেকে গেছে বেকার। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

সকালের আলো ফোটার আগেই বস্তির খুপড়ি থেকে কাজের সন্ধানে বের হচ্ছেন হাওরের বেকার নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-তরুণরা। কোদাল, ডালাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হচ্ছেন। কেউ খুঁজছেন জোগালির (রাজমিস্ত্রির সহকারী) কাজ, কেউ মাটিকাটা, কেউ রাজমিস্ত্রি আবার কেউ কেউ বাসাবাড়ি পরিষ্কারের কাজ।

আগে হাওরের কাজে দিনে ২৫০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা মজুরি খাটলেও এখন কমে গেছে। এর ওপর আবার কাজও পান না। তারপরেও বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন প্রতিদিন একটি কাজ খুঁজে বের করা, যা দিয়ে চলবে তার জীবন-সংসার। প্রতিদিন আবার কাজও জোটে না। তাই অর্ধাহারে-অনাহারেই কাটাতে হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই