বিপুল অস্ত্র ও গাড়িসহ ২৬জন আটক

হাজারী অনুগতদের ছাড়তে মহাসড়ক-রেলপথ অবরোধ

বিপুল অস্ত্রসহ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হাতে আটক হওয়া জয়নাল হাজারীর ২৪ নেতাকর্মী ও দুই চালককে আটকের প্রতিবাদ ও ছেড়ে দেয়ার দাবিতে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ফেনী-নোয়াখালী সড়ক ও ফেনী-সোনাগাজী সড়ক অবরোধ করে রাখে। ফলে এ তিনটি সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক মহাসড়কে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করেন।

রাত ৯টার দিকে নেতাকর্মীরা ফেনী রেলওয়ে স্টেশনের প্যানেল বোর্ড নিয়ে গেলে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসনের তৎপরতায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহাসড়ক ও রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

এদিকে শনিবার রাত ১২টায় ফেনী ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। এ সময় র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছি। যার কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকবে সে সমাজের শুত্রু। তার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান। আটক অস্ত্রগুলোর মধ্যে দু’একটা লাইসেন্সধারী বৈধ অস্ত্র থাকতে পারে। তবে যদি কেউ বৈধ অস্ত্র এবং অবৈধ অস্ত্র এক সঙ্গে ব্যবহার করে তাহলে বৈধ অস্ত্রগুলোও অবৈধ হয়ে যায়। যাদের কাছে অস্ত্র পাওয়া গেছে তারা কেউ লাইসেন্স বা কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি।’

এ সময় তার সঙ্গে ফেনী ক্যাম্পের পরিচালক মেজর মো. মোজাম্মেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপুল এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দুই চালক ও ২৪ জন যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে অস্ত্রসহ আটক করে।

আটক অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৫টি বিদেশি শর্টগান, ৫টি পিস্তল, ১টি একনলা বন্দুক ৪টি এলজি ও ১৬টি রামদা ২টি চায়নিজ কুড়াল, একটি দু’নলা বন্দুক। সেইসঙ্গে জব্দ করা হয়েছে ৩টি মাইক্রোবাস।

আটকরা হলেন- মো. আরাফাত হোসেন আসিফ, মো. নোমান, মো. হাসান, মো. শাহাদাত হোসেন, মো. কপিল উদ্দিন, মো. জেমী, মো. রবিউল ইসলাম, মো. ফারুক হোসেন, মো. সালেহ আহম্মদ, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. ওমর ফারুক, মো. ইমরান হোসেন, মো. একরামুল হক, আবু বক্কর সিদ্দিক, জামাল উদ্দিন, মো. শাহাদাত হোসেন, মো. এনামুল করিম রাজিব, আশরাফুল ইসলাম, মো. ইউসুফ ডলার, মো. মঈনুদ্দীন, মো. আবুল কাশেম, মো. আবদুর রহমান রিন্টু, মো. সরোয়ার হোসেন, চালক মো. রবিউল হক লিটন ও মো. আবু তাহের। আটকৃতরা ফেনী-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্যাহ’র বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা আজিজুল হককে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করে ফেনী ফিরছিল। তারা সকলেই ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর অনুসারী। দীর্ঘদিন ধরে দুই এমপির বিরুদ্ধে বিরোধ চলছিল।

প্রতিবাদে সমাবেশ করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা ১০টি মাইক্রোবাস নিয়ে ফেনী আসার পথে র‌্যাব সদস্যরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপুলে তাদের তাল্লাশি করে তাদের আটক করে বলে জানায় স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম জানিয়েছেন তাদের সিনিয়র নেতাদের কোনো কথা না শুনে র‌্যাব লাইসেন্সকৃত বৈধ অস্ত্রগুলো আটক করেছে।



মন্তব্য চালু নেই