হাসপাতাল থেকে বখাটে উধাও, ঘরছাড়া মা-মেয়েও!

তিনদিন পার হলেও বখাটে যুবক কৃষ্ণকে চাপাতি দিয়ে কোপানোর ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকেই মামলা করা হয়নি। এর মধ্যেই কোপ খাওয়া আহত বখাটে হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেছে।

অপরদিকে, বখাটেকে আক্রমণ করা মা ও উত্ত্যক্তের শিকার কলেজছাত্রী বাড়ি থেকে সরে গেছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের বার বার চেষ্টা করেও বাড়িতে কিংবা ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, অপারেশন) রফিকুল ইসলাম বলছেন, জখম অবস্থায় কৃষ্ণ মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। যেহেতু কোনো মামলা হয়নি, তাই আমরা তাকে আটক করিনি। কিন্তু কৃষ্ণ বা কথিত হামলাকারী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে শনিবার (৬ মে) হামলার ঘটনা অস্বীকার করলেও পরদিন রোববার (৭ মে) আহত কৃষ্ণ জানিয়েছিলেন, এর আগে একবার ভুল বোঝাবুঝির কারণে শ্রীপুর থানা পুলিশ তাকে আটক করলেও সালিশের মাধ্যমে তা মীমাংসা হয়ে যায়। শনিবার অতর্কিত কিছু যুবক কেন তার ওপর হামলা করলো তা তার জানা নেই। এসময় ওই নারী চাপাতি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কয়েকটি কোপও দেয়। এ ঘটনায় মামলা না করার জন্য হুমকি দেয়ায় কৃষ্ণ মামলা না করে আত্মগোপন করেছে।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, যেহেতু কোনো পক্ষই মামলা করেনি তাই কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত বখাটে কৃষ্ণ (২৪) ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আলফাপুর গ্রামের অসিত অধিকারীর ছেলে। আর ঘটনার শিকার মেয়েটি মাগুরার শ্রীপুর কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কৃষ্ণ দীর্ঘদিন ধরে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। শিক্ষক ও সহপাঠীরা ঘটনা জানার পর এক বার বখাটে কৃষ্ণকে ধরে পুলিশে সোপর্দও করেছিল। মামলা না করায় একদিনের হাজতবাসই তার শাস্তি হিসেবে নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাতে তার কোনো শিক্ষাই হয়নি। আবারো ওই ছাত্রীর পিছু নেয়। মেয়ের এমন নাজেহাল অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হন মা।

শনিবার দুপুরে পরীক্ষা দিতে মাকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছাত্রী রওনা দেন মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে। যথারীতি মেয়েটির পিছু নেয় বখাটে কৃষ্ণ। কলেজ গেটে পৌঁছালে আগের মতোই ওই ছাত্রীর হাত ধরে টান দেয় বখাটে।

পরীক্ষায় অংশ নেয়ার তাড়া থাকায় ছাত্রীর মা আগে তার মেয়েকে পরীক্ষা হলে দ্রুত পৌঁছে দিয়ে আসেন। এরপর বখাটেকে ধরতে বের হন। পেয়ে যান কলেজের সামনে চায়ের দোকানে। প্রথমে চড় থাপ্পড় মারেন। এক পর্যায়ে কয়েকজন যুবকের সহযোগিতায় বখাটে কৃষ্ণকে কলেজের ভেতর নিয়ে গিয়ে চাপাতি দিয়ে কোপান। রক্তাক্ত আহত অবস্থায় কৃষ্ণ পালিয়ে যান।

কলেজ গেটের কয়েকজন চা ব্যবসায়ী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের ভাষ্যমতে, কয়েকজন যুবক কৃষ্ণকে কলেজ ক্যাম্পাসে ধরে নিয়ে যায়। এরপর ওই নারী চাপাতি দিয়ে কয়েকটি কোপ দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় কৃষ্ণকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।



মন্তব্য চালু নেই