হাসিনাই জঙ্গিবাদের জননী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘জঙ্গিবাদের জননী’ বলে আখ্যা দিয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান শফিউল আলম বলেছেন, ‘সারা দেশে আজ পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে। সেজন্য প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে শেখ হাসিনা এর দায় বিএনপি-জামায়াতের ওপর চাপাচ্ছে। আসলে এসব হত্যাকাণ্ডের দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের।’

সোমবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) গোলটেবিল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান।

“কানেক্টিভিটির নামে ভারতকে ট্রানজিট প্রদান : বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত” শীর্ষক এ আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন।

তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকার দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে সরকারের জন্যই লাভ। কারণ, সেক্ষেত্রে দেশবাসী ভুলে যাবে যে, এই সরকার ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে।’

শফিউল আলম প্রধান বলেন, ‘কানেক্টিভিটি অথবা ট্রানজিটের নামে শেখ হাসিনার সেবাদাস সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার হৃৎপিণ্ড ছিড়ে দিল্লীর স্বার্থে দিল্লীর জন্য তথাকথিত করিডোর দিয়েছে। আর সেটা এই পবিত্র রমজান মাসে চালু করার অনুমতি দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? এখানে টাকার অঙ্কটা মুখ্য নয়। কারণ, এই করিডরের পেছনে যতটা না বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে, তার চেয়ে অধিক স্বার্থ হচ্ছে সামরিক। এই সামরিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার জন্যই ভারত দীর্ঘদিন ধৈর্যের সাথে অপেক্ষা করেছে, একইসঙ্গে তারা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তও করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতরে দিয়ে ভারতের প্রতি টন পণ্য পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১৯২ টাকা। এর মানে হলো, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ১৯২ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল্য নাও থাকতে পারে। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য দেয়া ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের দাম আছে।’

প্রধান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, শেষ বিচারে ভারত ট্রানজিট পাবে না। আর শেখ হাসিনাকেও এ দেশের মানুষ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে দেবে না।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার অরাষ্ট্রদূতসুলভ আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করে জাগপা সভাপতি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলমান সব ধর্মের লোককে হত্যা করা হলেও ভারতীয় হাইকমিশনার শুধু নিহত হিন্দু পুরোহিতের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। গতকাল (রোববার) তিনি রামকৃষ্ণ মিশনে গেছেন। এর আগে বৌদ্ধ মন্দির পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, খ্রিষ্টানদের চার্চ ও শিয়া মসজিদে হামলা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোথাও যান নাই। এই অরাষ্ট্রদূতসুলভ আচরণের জন্য দেশবাসীর পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনারকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

এ সময় তিনি বাংলাদেশে একটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে তার সুযোগ নিয়ে ভারত এখানে সামরিক অভিযানের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে বলেও সন্দেহ পোষণ করেন।

‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’র আহ্বায়ক মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন বাবলু, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মহাসচিব অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো. এজাজ হোসেন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই