১০ গ্রামবাসির সংঘর্ষে আহত শতাধিক, আশঙ্কাজনক ৫

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ১০ গ্রামবাসীর মধ্যে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে শতাধিক গ্রামবাসি আহত হয়েছেন। তাদের ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কৈতক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৫ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ছাতক থানা পুলিশের সঙ্গে সুনামগঞ্জ সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ যোগ দিয়ে যৌথভাবে চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন- জুসেন (১৮), মারুফ(১৮), রফিক(৩৫), দেলোয়ার(২৮), সাজ্জাদ(১৮), রমজান আলী(২২), রিপন মিয়া(১৮), সৈয়দ আলী( ২২), লিটু দাশ (২৫) ও ইমরান হোসেনসহ (২১) আরও অনেকে।

এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে আলী (২৪) সাজ্জাদ হোসেন (১৮), আক্তার হোসেন (২৬), হবিব (২৫), মিয়াজমকে (২৩)।

স্থানীয়রা জানায়, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাড়াকে কেন্দ্র করে দুই ব্যক্তির কথা কাটাকাটির পর ছাতক পৌর এলাকার এক ব্যক্তির পক্ষে চরের বন, বৌদা, তাতিকোনা ও মঙ্গলপাড়া গ্রাম এবং অপরব্যক্তির পক্ষে মুক্তিরগাঁও, পিরোজপুর, রংপুর, চকগাঁও ও গৌরীপুরসহ মোট ১০টি গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় উপজেলার মুক্তিরগাঁওয়ের এক ব্যক্তি ও শহরের চরেরবন গ্রামের এক ব্যক্তির কথা কাটাকাটির জের ধরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে। এ দুই গ্রামের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে আরও ৮ গ্রামের লোকজন। তারা ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫১ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৯ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। ছাতক থানা পুলিশকে সহায়তার জন্য সুনামগঞ্জ সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সুনামগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ দলের নেতৃত্ব দেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।

ছাতক থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, ‘কথা কাটাকাটি নিয়ে ২ গ্রামের মানুষের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়, পরে আরও ৮ গ্রামের লোকজন এ ঘটনার সাথে জড়িয়ে পরে। ঘটনার নিয়ন্ত্রণ আনতে সুনামগঞ্জ সদর থেকে পলিশের একটি দল ছাতকে পৌঁছে আমাদের সহায়তা করলে রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।’

জেলা পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ছাতকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ব্যাক্তির কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঘটনাটি গ্রামের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও কাঁদানো গ্যাস নিক্ষেপ করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’



মন্তব্য চালু নেই