১৫ দিনের মধ্যে ফখরুলকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

পল্টন থানার নাশকতার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তার জামিনের মেয়াদ শেষ হয়।

আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে ছিলেন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন ও নিতায় রায় চৌধুরী। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা প্রমুখ।

২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় পল্টন থানার নাশকতার তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে হাইকোর্ট অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আপিল বিভাগ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন এবং জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এছাড়াও হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তি করতে বলেন।

হাইকোর্ট গত বছরের ২৪ নভেম্বর রুল নিষ্পত্তি করে ওই তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে তিন মাসের জামিন দেন। ফখরুলের আইনজীবীদের দাবি, রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে সাধারণত মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন হয়। কিন্তু এখানে মাত্র তিন মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। এ কারণে হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মির্জা ফখরুল গত ৭ জানুয়ারি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।

জামিনের বিষয়ে আদেশ দেয়ার আগে বিচার বিভাগ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য প্রকাশের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর দেয়া ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন আপিল বিভাগ। পরে তা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলামের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগিফ রউফ চৌধুরী।

এর আগে দুই বার ব্যাখ্যা দেওয়ার পরেও আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। তাই তাকে আবারো (তৃতীয়বার) হলফনামা আকারে ব্যাখ্যা দিতে বলেন আপিল বিভাগ।

সিলেটে বিচার বিভাগ নিয়ে মন্তব্য করায় মির্জা ফখরুলের কাছে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাখ্যা চান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ। ফখরুলের জামিন বিষয়ক শুনানি চলাকালে তাকে বক্তব্যের বিষয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলেন আদালত। কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারি আইনজীবীরা ব্যাখ্যা দাখিল করতে গেলে আদালত মির্জা ফখরুলের সাক্ষরিত হলফনামা চান। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে মির্জা ফখরুল সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত হয়ে হলফনামা জমা দেন।

২৫ ফেব্রুয়ারি হলফনামা দাখিলের সময় আদালত মির্জা ফখরুলের বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন ধরণের বক্তব্য দেখতে পান। এরপর এ বিষয়ে ফখরুলের কাছে আবারো ব্যাখ্যা চান আপিল বিভাগ।

উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, বিচার বিভাগেরও স্বাধীনতা নেই।”



মন্তব্য চালু নেই