২০১৬ সালে দেশে এইডস আক্রান্ত ৫৭৮, মারা গেছেন ১৪১ জন

এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৯ হাজার ৬০০ জন। এর মধ্যে ৭৯৯ জন মারা গেছে। শুধু ২০১৬ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭৮ জন এবং যার মধ্যে ১৪১ জন মারা গেছেন।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম এ তথ্য জানান। এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের শ্লোগান ‘আসুন ঐক্যের হাত তুলি, এইচআইভি রোধ করি।’

বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস মুক্ত হবে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এইচআইভি এইডস প্রতিরোধ ও নির্মূলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে তাহলে এইডস থাকবে না। বাঙালির পক্ষে সম্ভব এইডস মুক্ত হওয়া।’

প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেন অবৈধ সম্পর্কে জড়াব? একজন ব্যক্তির অপরাধে তার সন্তানরা আক্রান্ত হচ্ছে। আবার একজন চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অবহেলায় অন্য রোগে আক্রান্ত রোগীরা এইডস আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পোলিওসহ অনেক রোগ মুক্ত হয়েছি। আমরা বাঙালিরা যেভাবে ৯ মাসে দেশ স্বাধীন করেছি তেমনি আমরা এইডসসহ কঠিন কঠিন রোগ থেকে মুক্ত হব।’

আলোচনা সভায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল এইডস ও এসটিডি প্রোগ্রামের ডিরেক্টর ডা. মো. আনিসুর রহমান। মুল প্রবন্ধে বলা হয়, এশিয়া প্যাসিফিক রিজিয়নে ৫ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন।

বাংলাদেশে এইচ আইভি আক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন কালে জানানো হয়, ৯ হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশে। এর মধ্যে ৭৯৯ জন মারা গেছে। শুধু ২০১৬ সালে আক্তান্ত হয়েছে ৫৭৮ জন এবং যার মধ্যে ১৪১ জন মারা গেছেন।

প্রবন্ধে আরো জানানো হয়, দেশে ১১০ টি বেসরকারি কেন্দ্রে এইচ আই ভি টেস্ট করা হচ্ছে। সেই সাথে প্রথমবারের মত ১৮টি সরকারি হাসপাতালেও সরকারি ভাবে টেস্ট করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ এইডস বিভাগের বাংলাদেশ অফিসার ইনচার্জ ডা. সায়মা খান বলেন, ‘এখন যে হারে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সে হার কমানো সম্ভব না হলে ২০৩০ সালের মধ্যে এইচআইভি সংক্রামিতের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশ কিছুদিন আগেও এইডস প্রতিরোধে এগিয়েছিল। কিন্তু এখন আবার পিছিয়ে পড়েছে।’

অনুষ্ঠানে এইডস আক্রান্তদের সংগঠন পিএল এইচআইভি নেটওয়ার্কের সভাপতি হাফিজুদ্দিন মুন্না বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ৯ হাজারের অধিক মানুষ পিএল এইচআইভি আক্রান্ত। এদের যদি চিকিৎসার আওতায় আনা না যায় ও তাদের মধ্যে যদি সচেতনতা সৃষ্টি করা না যায় তাহলে তাদের মধ্যমে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।’

এ সময় তিনি তরুণ ও যুব সমাজের প্রতিও সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি এইডস আক্রান্তদের প্রতি অবহেলা, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা না করে সহযোগীতার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আনুরোধ জানান।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইকবাল আরসালান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার ও এনজিও প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এইচটি এইডস নেটওয়ার্ক সভাপতি আবু ইউছুফ চৌধুরী প্রমুখ। সভায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও সেক্সওয়ার্কার প্রমুখ আলোচনা সভায় অংশ নেন।



মন্তব্য চালু নেই