২০১৬ সালে বেড়ানোর জন্য সবচেয়ে চমৎকার ৫ টি স্থান

ভ্রমণপিপাসুরা এই বছর কোথায় কোথায় বেড়াবেন ঠিক করেছেন কি? আনন্দময় ভ্রমণের জন্য প্রথমেই দরকার পরিকল্পনা। এত চমৎকার আর সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে পৃথিবীতে যে বাছাই করা সত্যিই কঠিন। কোথায় যাবেন, কোন ঋতুতে গেলে আসল সৌন্দর্য্যটা দেখা যাবে, কী কী অবশ্যই করবেন সেখানে। আপনাদের জন্য আমরা বাছাই করেছি বিশ্বের আকর্ষণীয় ৫ টি স্থান। আসুন দেখে নিই স্থান গুলোর মনোলোভা বৈশিষ্ট্যগুলো।

১। হাওয়াই ভলকানো ন্যাশনাল পার্ক
বরফাঞ্চলে তুষারপাত দেখার অভিজ্ঞতা হয়তো আপনার হয়েছে। চলুন এবার একটু উষ্ণতার দিকে যাই। দেখে আসি লাভা! বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ঘণীভুত লাভা ছড়িয়ে আছে হাওয়াই ভলকানো ন্যাশনাল পার্কে, এখানকার মাটি আদিম, কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। জায়গাটি প্রসিদ্ধ হাওয়াই এর আগুনের দেবী পেলে-এর বাসস্থান হিসেবে। কিলাওয়ার অধিবাসীদের মতে, পেলে খুবই ব্যস্ত এবং চঞ্চল দেবী। যার কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে স্বক্রিয় দুই আগ্নেয়গিরির এটি একটি। ১৯৮৬ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের অভ্যন্তর থেকে এই আগ্নেয় দ্বীপটি তৈরি হয়। যাকে ঘিরে গড়ে ওঠে ৫২০ বর্গ মাইলের বিশাল এই পার্কটি।
শুধু আগ্নেয়গিরি নয় এখানে আরো দেখার সবুজ ঘন রেইন ফরেস্ট, উপত্যকা, হাওয়াইয়ানদের তৈরি হাজারো পেট্রোগ্লিফস। এত গাছ আর জীব বৈচিত্র হাওয়াই ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না।

কখন যাবেন-
মার্চের মাঝামাঝি থেকে মে। আবার কম খরচ এবং ভিড় এড়াতে চাইলে যাবেন সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে, বৃষ্টির দিনগুলো এড়িয়ে।

২। হোকাইডো, জাপান
বরফের মাঝে স্কি করার অনন্য অভিজ্ঞতা নিতে ঘুরে আসুন জাপানের হোকাইডো থেকে। এটি জাপানের সর্বোউত্তরের দ্বীপ কুয়াশাচ্ছন্ন সমুদ্র আর সাইবেরিয়া অঞ্চলের কাছাকাছি। শীতে চমৎকার তুষারপাত হয় এখানে। এখানে কিছু পাহাড় আছে ৬৩ ফুটের কাছাকাছি উচ্চতার। পাহাড় বেয়ে তুষার নিচে আসতে আসতে শুকনো আর হালকা হয়ে যায় পাউডারের মত যা স্কি করার জন্য দূর্দান্ত।

কখন যাবেন-
নভেম্বরের শেষের দিক থেকে এপ্রিল এবং মে এর শুরুর দিকে।

৩। ফিলিপাইন
৭,৭০১ টি দ্বীপের সমষ্টি ফিলিপাইন। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী বেড়ানোর জায়গা। ৪০০ বছর স্পেন আর পরবর্তী ৪৮ বছর আমেরিকার শাসনাধীন ছিল ফিলিপাইন। এখন এখানে রয়েছে মূলত আদিবাসি, ক্যাথলিক আর পোপ ধারায় বিশ্বাসী ক্রিশ্চিয়ানরা। ব্যাস্ত ম্যানিলা শহরের বাইরে ফিলিপাইনের দ্বীপ উপত্যকাগুলো বেড়ানোর জন্য চমৎকার। হাজারো দ্বীপের মধ্যে গ্রেট সান্তা ক্রুজ দ্বীপের গোলাপি বালি আর আলবে দ্বীপের কালো বালি দেখতে যাবেন অবশ্যই। আরও দেখবেন ম্যানিলা বীচের অসাধারণ সূর্যাস্ত।

কখন যাবেন-
নভেম্বার থেকে ফেব্রুয়ারি, শুষ্ক মৌসুমে।

৪। সিসিলি
কেনিয়ার ১১০০ মাইল পূর্ব উপকূলে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত সিসিলি দ্বীপপুঞ্জ।মনকে মুগ্ধ করবে স্বচ্ছ টলটলে পানিতে হাজারো রকমের রঙ্গীন সামুদ্রিক মাছ। আরও দেখতে পাবেন সিসিলির নীল কবুতর আর স্থানীয় ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির সব প্রাণী বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃত ভ্যালি দে মাই ন্যাচার রিজার্ভে যা কিনা জুরাসিক পার্কের মতই দারুণ।

কখন যাবেন-
মার্চ থেকে মে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর ডাইভিং এর জন্য। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পাখি দেখার জন্য। সার্ফিং এবং হাইকিং এর জন্য মে থেকে সেপ্টেম্বর। নৌকা ভ্রমণ এবং স্নোরকেলিং এর জন্য যেতে পারেন বছরের যেকোন সময়। বুঝতেই পারছেন প্রাকৃতিক বিচিত্রিতার ভান্ডার এই সিসিলি আপনাকে কখনোই নিরাশ করবে না।

৫। কোড ডি’ওর, বারগেন্ডি
অয়াইন তৈরির জন্য বিখ্যাত কোড ডি’ওর। চমৎকার পরিকল্পিত আঙ্গুর ক্ষেতে বেড়াতেও ভাল লাগে।সম্প্রতি যোগ হয়েছে, ইউনেস্কোর ঘোষণা। ২০১৫ সালে এই অঞ্চলকে অয়ার্ল্ড হেরিটেজ এর অংশ হিসেবে তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। একটা বাইসাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন পুরো এলাকা, অংশ নিতে পারেন অয়াইন তৈরিতেও। পারিবারিক ট্যুরের জন্য এটি একটি চমৎকার জায়গা। একই সাথে মন কাড়বে এখানকার স্থাপনাগুলো।

কখন যাবেন-
বোরাক আনতর্জাতিক ফেস্টিভাল বোরাক অপেরা তে অংশ নিতে হলে যাবেন জুলাই মাসে। অক্টোবর এবং নভেম্বরে যাবেন হারভেস্ট ফেস্টিভাল এবং শরতের পল্লবগুচ্ছ দেখতে।



মন্তব্য চালু নেই