২০ বছর বয়সীদের ওজন কমানোর কিছু উপায়

২০ বছর বয়স একটি মেয়ের পরিবর্তনের বয়স। ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুতির সাথে সাথে অনেকেই সংসারীও হয়ে যায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক বড় একটি সমস্যা। পরিবর্তনের এই সময়টাতে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছুড়ে ফেলে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আনার আদর্শ সময়। এই বয়সে ওজন নিয়ন্ত্রণের কয়েকটি নিয়ম জেনে নেই চলুন।

১। খাদ্যাভ্যাসের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা
যদি ক্যালরি কমানোর জন্য কিশোর অবস্থায় আপনি খারাপ খাদ্যাভ্যাস মেনে চলেন তাহলে এখন সময় এসেছে এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস বাদ দেয়ার। ওজন নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ও এক্সারসাইজ সাইকোলজিস্ট এবং নিউজার্সির রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান নিউট্রিশনিস্ট এলিস চাসেন সপোভ বলেন, “মানুষ হতাশা থেকেই খামখেয়ালি খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলেনা বরং অজ্ঞতার জন্যই এমনটা করে থাকে”। আপনি এখন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ তাই আপনার এমন স্বাস্থ্যকর খাদ্য নির্বাচন করা প্রয়োজন যার মাধ্যমে আপনি সারাজীবন সুস্থ থাকতে পারেন। আপনার খাবারের প্রধান অংশই হওয়া উচিৎ ফল ও শাকসবজিতে পূর্ণ এবং এর পাশাপাশি চর্বিহীন মাংস ও আস্ত শস্যদানার কার্বোহাইড্রেট সাহায্যকারী উপাদান হিসেবে থাকা উচিৎ।

২। ক্যাফেটেরিয়ায় খাদ্য নির্বাচন
আপনি যদি হলের ডাইনিং এ বা অফিসের ক্যান্টিনে খান তাহলে স্বাস্থ্যকর খাদ্য পাওয়ার উপায় জানতে হবে। ভাজাপোড়া খাওয়ার পরিবর্তে সিদ্ধ করা, গ্রিল্ড বা রোস্ট করা মাংস ও মাছ নির্বাচন করুন এবং এর সাথে সিদ্ধ সবজি গ্রহণ করুন। মাখন, পনির ও ক্রিম সস যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। মিস্টির পরিবর্তে ফল খান।

৩। রান্নার জ্ঞান অর্জন করুন
স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত ফ্রি সেমিনারে অংশগ্রহণ করতে পারেন বা রান্নার ক্লাস করতে পারেন। ডায়েটিশিয়ানের সাথে কথা বলে যে কেউ উপকৃত হতে পারেন। আপনার জীবনধারার জন্য কোন ধরণের খাদ্যাভ্যাস উপযোগী সে বিষয়ে পরামর্শ নিতে পারেন।

৪। ফ্যাটযুক্ত খাবার খান
সবধরনের ফ্যাটই ক্ষতিকর নয়। ডা. বাউডেন বলেন, সব ধরণের ফ্যাট একইভাবে তৈরি হয়নি। তিনি তার ক্লায়েন্টদেরকে কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে হেলদি ফ্যাট ও প্রোটিন খাওয়ার পরামর্শ দেন। আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর এবং অনেক সুস্বাদু খাবারে পাওয়া যায় এদের যেমন- অ্যাভোকাডো, আমন্ড, অলিভ ওয়েল ও শণ বীজ।

৫। লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে উদ্বুদ্ধ হবেন না
সফটড্রিংক থেকে থেকে শুরু করে প্রসেসড খাদ্য প্রস্তুতকারক অনেক কোম্পানি তাদের খাদ্য প্রস্তুতপ্রণালী সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়না। ২০১৪ সালে “ফুড স্টাডিজ: এন ইন্টারডিসিপ্লিনারি জার্নাল” এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, গবেষকেরা ৩১৮ জন কলেজ স্টুডেন্টকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন যে, প্যাকেটজাত খাদ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে “অরগানিক” বা “হোল গ্রেইন” শব্দ থাকেলেই স্বাস্থ্যকর ভেবে কিনেন। প্যাকেটের চাকচিক্য ও এই ধরণের শব্দ দেখেই খাদ্য বিচার করা ঠিক নয়। পুষ্টি উপাদানের লেভেলটিও ভালোভাবে পড়া উচিৎ।

৬। ঘাম ঝরান
হাঁটা, দৌড়ানো, বাইক চালনো, সাঁতারকাটা, নাচ শেখা অথবা খেলাধুলার মাধ্যমে যতটুকু সম্ভভ ঘাম ঝরাতে চেষ্টা করুন। যদি ওজন কমাতে চান তাহলে ঘাম ঝরানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

২০০৯ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ সোশ্যাল সাইকোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে ৬৬ দিন সময় লাগতে পারে, অন্তত ১০ সপ্তাহ অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয়। তাই আপনার নতুন খাদ্যাভ্যাসের সাথে এ্যাডজাস্ট হতে ধৈর্য ধরুন। তাছাড়া আপনাকে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে যেমন- শুরুতেই ৫ কিলোমিটার দৌড়ানোর চিন্তা না করে ১ মাইল দৌড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।



মন্তব্য চালু নেই