২৪ঘন্টায় ২৪বার ধর্ষণ, অকথ্য অত্যাচারের সাতকাহন

ইয়াজিদিদের ওপর, বিশেষ করে ইয়াজিদি মেয়েদের ওপর আইএসআইএস জঙ্গিদের অত্যাচারের কথা নতুন নয়৷ আট হোক বা আশি, সব বয়সের মেয়েদের ওপরেই চোখ এই জঙ্গিগোষ্ঠীর৷ সুযোগ পেলেই ধরপাকড়, অত্যাচার, গণহত্যা তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে রয়েছে নিত্য নতুন অত্যাচার, যা শুনলে শিউরে উঠবে যে কেউ৷ দুঃস্বপ্নেও এমন ঘটনার কথা ভাবতে পারবেন না আপনি৷ মেয়েদের ওপর হওয়া এমনই কিছু অত্যাচারের কথা জানিয়েছে খোদ অত্যাচারিত যৌনদাসীরা, যারা কোনওক্রমে পালিয়ে আসে এই জঙ্গিদের ডেরা থেকে৷

সুযোগের অপেক্ষা৷ আর সময়মতো কার্যসিদ্ধি৷ এমনই মন্ত্রে বছরের পর বছর নিজেদের কামনা বাসনা চরিতার্থ করে চলেছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী৷ তাদের রাগ, তাদের আক্রোশ থেকে বাঁচতে পারে না একরত্তি মেয়েরাও৷ ১-৯বছর বয়সের বাচ্চারা তাদের কাছে মণি-মানিক্যের থেকেও দামি৷ পরিণত বয়সে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করার আগেই, ছোটবেলাতেই বিক্রি করে দেওয়া হয় এদের৷ আর এক্ষেত্রে ছোটদের মূল্য সব থেকে বেশি ধার্য করেছে এই জঙ্গিরা৷ ইয়াজিদি নারী এবং শিশুদের অপহরণ করার পর তাদের অবর্ণনীয় কুমারিত্ব পরীক্ষায়র জন্য পাঠানো হয়, নির্দিষ্ট জায়গায়৷ তারপর পরীক্ষার ফলাফলই তাদের মূল্য ধার্য করে দেয়, আর সেই অনুযায়ীই তাদের পাঠানো হয় বিভিন্ন জায়গায় যৌনদাসী হিসেবে৷

এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে যে সব মেয়েরা নিজেদের সৌন্দর্য নানাভাবে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে, তাদের ভাগ্যে আরও নির্যাতন জোটে৷ তাদের প্রিয়জন, পরিবারের সদস্য অথবা স্বামী-পুত্রকে চোখের সামনে নির্মমভাবে হত্যা করে এই জঙ্গিরা৷ শোনা যায়, বারবার ধর্ষণের শিকার হয়ে এমনই এক মহিলা আগুণের ওপর ঝাঁপ দেয়, নিজের সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য৷ যৌন কার্যে সম্মতি না দিলে, অকথ্য অত্যাচারের শিকার হতে হয় তাদের৷ এমনকি লোহার খাঁচার মধ্যে তাদের ঢুকিয়ে অগ্নিসংযোগের খবরও শোনা গিয়েছে৷

শুধু তাই নয়, এরা অনেকক্ষেত্রে মেয়েদের অপহরণ করে বিক্রিও করে না, রেখে দেয় নিজেদের কাছেই৷ নিজেদের ভোগবিলাসের জন্য এরা ঘন ঘন অপহরণ করে, অথবা মেয়ে কেনা বেচা করে৷ সারাদিন ধরে চলে যৌন নির্যাতন৷ আর সেই কাজে বাধা দিলে ভাগ্যে জোটে প্রহার৷ সেই সঙ্গে বাড়ির কাজ, হাজার এক ফাই ফরমাশও মেনে চলতে হয় এই মেয়েদের৷ খাওয়া দাওয়া যাকে বলে নাম কে ওয়াস্তে, শুধুই শরীর শরীর খেলায় এই জঙ্গি গোষ্ঠী পিষে ফেলে হাজার হাজার শরীর৷ তাদের লালসার হাত থেকে রেহাই পায়না, ৭ বছরের বাচ্চাও৷ রেহাই পায় না গর্ভবতী মহিলা৷

আত্মহত্যা করতে গিয়েও দুর্ভাগ্যক্রমে যারা বেঁচে যায়, তাদের পরিণাম শুনলে আরও ভয়ে শিউরে উঠবেন আপনিও৷ ২৪ঘন্টায় ২৪ বারের বেশিও ধর্ষিতা হয়েছে বহু মেয়ে৷ তাঁদের জীবনের কোনো দামই নেই এইসব জঙ্গিদের কাছে৷ যতক্ষণ মেয়েদের শরীরে যতক্ষণ প্রাণ আছে, ততক্ষণই তাদের ভোগ করে চলে এরা৷ শুধুমাত্র ভোগ্যপণ্য আর অত্যাচারের জন্য দিনের পর দিন এরা এই খেলায় মেতে রয়েছে৷ চলছে অপহরণ, খুন, ধর্ষণ৷ পালিয়ে আসা মেয়েরা আজ অনেকেই মানসিক চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ জীবনে ফিরে আসার চেষ্টায়৷ তবে অত্যাচারের সেই দিনরাত্রি সত্যিই কি স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা সম্ভব৷ নাকি তাকে ভুলতে গেলে বারবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ভয়ঙ্কর সেই মুহুর্তগুলো, যেখানে নারী শুধুই সেক্সটয়, যা ইউজ় অ্যান্ড থ্রো-এর বেশি কিছু নয়৷



মন্তব্য চালু নেই