২৫ লাখ টাকার ষাঁড় দেখতে জনতার ভিড়

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামের পরিষ্কার বিবির ২৫ লাখ টাকার ষাঁড় দেখতে জনসাধারণের ভিড় বাড়ছেই। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন করা এ ষাঁড় এক নজর দেখতে উৎসুক জনতা সাটুরিয়া উপজেলা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসছে।

পরিষ্কার বিবির মেয়ে ইতি আক্তার মূলত এ ষাঁড় সাড়ে ৩ বছর ধরে লালন-পালন করে আসছেন বলে জানা যায়। ষাঁড়টিকে লক্ষ্মী বলে ডাকলে কথা বেশি শোনে, রাগ উঠলে নলকুপের ঠাণ্ডা পানি শরীরে ছিটিয়ে দিলে সে শান্ত হয় বলে জানান পরিষ্কার বিবি। এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নিতাই চন্দ্র দাস বলেন, পরিষ্কার বেগমের এ ষাঁড় গত দুই বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করছি।

এ ষাঁড়কে কোনো প্রকার মোটা-তাজাকরণ ওষুধ সেবন ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হচ্ছে। এ ষাঁড়ের উচ্চতা ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি, লম্বা ৯ ফিট, বেড় ৬ হাত আমাদের হিসাব অনুযায়ী সর্বনিন্ম ওজন ৩৫ মন। বর্তমানে মানিকগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় ও বেশি ওজন এ ষাঁড়ের। পরিষ্কার বিরির মেয়ে ইতি আক্তার জানান, তাকে ছাড়া কেউ তার ষাঁড় লক্ষ্মীকে শান্ত করতে পারে না, একে বিভিন্ন রকমের দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয়। লক্ষ্মীকে তিন বেলা বড় ধরনের খাবার খাওয়াতে হয়।

চিড়া, ছোলা, গুর ও ভূষি পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর মিষ্টি লাউ, কুমড়া কেটে সিদ্ধ করে সব একত্র করে তিন বেলা তাকে খাবার খাওয়ানো হয়। লক্ষ্মীর প্রতিদিনের খাবারের রুটিনে আছে লেবু, মাঝে মাঝে টক পানি-তো আছেই। এক ঘণ্টা পর পর নাস্তা সারেন বিচি কলা ও সবড়ি কলা দিয়ে। তাকে নিয়মিত স্যালাইন খাওয়ানো হয়। ইতি আরো বলেন, তার বাবা খাইরুল ইসলাম তাদের জন্য বাজার থেকে চাল কিনতে ভুলে গেলেও লক্ষ্মীর জন্য আঙ্গুর, কমলা ও মালটা আনতে ভুল করেন না।

প্রতিদিন ফল খাওয়ান প্রায় ৩ থেকে ৪শ টাকার। ফুকুরহাটি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. সেলিম হোসেন বলেন, অনেক দিন ধরে শুনছি এ ষাঁড়টির কথা, তাই আজ দেখতে আসা। ঢাকার ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা ১০ বন্ধু ১৫ কিলোমিটর দূর থেকে এসেছি ষাঁড় দেখতে। পরিষ্কার বিরির পাশের বাড়ির শিক্ষক রশিদ মিয়া জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন আসছে এ ষাঁড় দেখার জন্য। সাধারণ মানুষের সঙ্গে পাইকাররাও আসছেন কেনার জন্য। কিন্তু ষাঁড়টি দেখার পর দাম বলার সাহস পান না। পরিষ্কার বিবি বলেন, লক্ষ্মীর জন্মের এক মাস ২২ দিন পর লক্ষ্মীর মা মারা যায়।

পড়ে নিজের সন্তানের মতো করে আস্তে আস্তে লালন করতে থাকি। সাড়ে তিন বছর ধরে আমার স্বামী খাইরুল ও কন্যা ইতি তিনজন মানুষ ওর পিছনে পরিশ্রম করে আজকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। শেষ দেড় বছর প্রতিদিন এক হাজার টাকা খরচ হচ্ছে ওর পিছনে।

বর্তমানে তিনি এ ষাঁড়ের দাম চাচ্ছেন ২৫ লাখ টাকা। তবে কোনো ভালো মানুষ কোরবানি দিতে চাইলে দাম কিছুটা কমাবেন বলে জানান তিনি। সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নিতাই চন্দ্র দাস জানান, উচ্চতা ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি, লম্বায় ৯ ফিট, বেড় ৬ ফিটের এ ষাঁড় অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিসিয়ান জাতের।



মন্তব্য চালু নেই