৪০ পরীক্ষার পর চিকিৎসা শুরু হবে ‘বৃদ্ধ শিশু’র (ভিডিও)

বৃদ্ধের মতো দেখতে চার বছর বয়সি শিশু বায়েজিদ শিকদারের শরীরের বিভিন্ন বিষয়ে অন্তত ৪০টি পরীক্ষার পর তার চিকিৎসা শুরু হবে। গত সোমবার (৮ আগস্ট) তার বিভিন্ন পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

গত ৬ আগস্ট শনিবার বায়েজিদকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর বিনামূল্যে তার চিকিৎসা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার বিকেলে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। এ সময় তিনি জানান, এখনো বায়েজিদের রোগ শনাক্ত হয়নি। সোমবার থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। তার দেহের বিভিন্ন বিষয়ে অন্তত ৪০টি পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রোগ শনাক্তের পর সে অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু হবে।

তবে পরীক্ষার জন্য কতদিন সময় লাগবে তা নিশ্চিত করে বলেননি ডা. সামন্ত লাল সেন।

ঢামেক হাসপাতালে বায়েজিদকে ভর্তির পর তার চিকিৎসার জন্য আট সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক।

বায়েজিদের বাবা লাভলু শিকদার, মা তৃপ্তি খাতুন। তাদের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামে। ২০১২ সালের ১৪ মে বায়েজিদ জন্মগ্রহণ করে।

লাভলু শিকদার জানান, ঢাকা মেডিক্যালে বায়েজিদকে আনার আগে তাকে মাগুরা ও ফরিদপুরে চিকিৎসক দেখানো হয়েছে। জন্মের সময় বায়েজিদের দেহে শুধু হাড় আর চামড়া ছাড়া মাংসের অস্তিত্ব বোঝা যেত না। তবে এখন তার দেহে মাংসের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তার বয়স চার বছর হলেও তার কণ্ঠস্বর বয়স্ক মানুষের মতো। দাঁত এবং মুখের অবয়বও বয়স্কদের মতো।

তিনি আরো জানান, দেখতে বয়স্ক হলেও তার আচার-আচরণ একবারেই শিশুসুলভ। অন্য শিশুদের মতোই দুষ্টুমি করতে পছন্দ করে সে। লেখাপড়ার প্রতিও তারা বেশ ঝোঁক আছে। প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু বিষয় সে পড়তে পারে। লেখালেখির করার জন্য মাঝে মাঝে কলম চায়। কলম দিলে ইচ্ছেমতো কাগজে দাগ কাটতে শুরু করে। আর না দিলে সে রেগে যায়।

ঢাকা মেডিক্যালে অন্তত দুই ঘণ্টা বায়েজিদের কাছে থেকে লক্ষ্য করা যায়, যখন যা ইচ্ছে করে, তখনই সে তা করতে চায়। কখনো লেখাপড়া, কখনো খেলা আবার কখনো সে দুষ্টুমিতে ব্যস্ত থাকে। তাকে খুব কম সময়ই শান্ত থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া যেকোনো প্রয়োজনের সে বাবার শরণাপন্ন হয়। সে বাবাকে ‘এ আব্বা’ বলে সম্বোধন করে। যেমন : এ আব্বা পানি খাব, এ আব্বা বল খেলব, এ আব্বা কলা খাব, এ আব্বা থু থু ফেলব। থুথু ফেলতে ইচ্ছে করলেও সে যেখানে-সেখানে থুথু ফেলে না। বাবার কাছে বলার পর বাবা ঝুড়ি এগিয়ে দিলে তাতে সে থুতু ফেলে।

হাসপাতালে বায়েজিদের মা-বাবা ছাড়াও তার নানা মছিয়র মণ্ডলও আছেন। নানার সঙ্গেও সে মজা করে। কলা খেয়ে অনেক সময় নানার দিকে খোসা ছুঁড়ে মারে। খেলনা বলটিও ছুঁড়ে মারে নানার গায়ে। নানাও আবার বলটি বায়েজিদের হাতে তুলে দেয়। এভাবেই হাসপাতালে দিন কাটছে বায়েজিদ ও তার পরিবারের।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুণ…



মন্তব্য চালু নেই