বাকপ্রতিবন্ধী প্রেমিক জুটির অসম প্রেম, অবশেষে...

৫লাখ টাকার কাবিনে বিয়ে করলেন নবীগঞ্জের পান্নাকে সিরাজ

ছনি চৌধুরী,(হবিগঞ্জ) নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : কথা বলতে না পারলেও ইশারা ইঙ্গতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অনুভূতির প্রকাশ তো আর থেমে থাকে না। যেমন থাকেনি সিরাজ আর পান্নার জীবনে প্রেমের কাহিনী। আর প্রেমের জন্য মুখে কোন ভাষার প্রয়োজন নেই, নেই দুরত্বেরও বালাই। তাইতো সুদূর লন্ডন থেকে বাকপ্রতিবন্ধী সিরাজ আহমদ বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন আরেক বাকপ্রতিবন্ধী ফাবিহা খানম পান্নার প্রেমের টানে। আর সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেই ঘর বাঁধতে গতকাল শুক্রবার বিয়ে পিড়িতে বসলেন দুই জেলার দুই বাকপ্রতিবন্ধী।

আউশকান্দি রহমান কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। ৫ লাখ টাকার দেন মোহরে বিয়ের কাবিন করেন কাজী ছলিম হোসেন। মুখে কথা বলতে না পারলেও ফাবিহা খানম পান্না ও সিরাজ আহমদ বিয়ের শাড়ী ও সেরোয়ানী পাগড়ী পড়ে বিয়ের অনুষ্টানে কনে এবং বর’কে হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিল। এ যেন এক অসাম প্রেমের গল্প কাহিনী! কনে পক্ষের লোকজন ও বর যাত্রী ছাড়াও উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল আলোচিত বাকপ্রতিবন্ধি প্রেমিক জুটির বিয়ের অনুষ্টান উপভোগ করার জন্য।

এ সময় রহমান কমিউনিটি সেন্টারে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। সিলেট ও ঢাকা থেকে বর যাত্রী হিসেবে এসেছেন বর সিরাজ আহমদের ১০জন বন্ধু। সবাই বাকপ্রতিবন্ধী । তাদের মধ্যে লক্ষ করা গেছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। বাকপ্রতিবন্ধী সিরাজের বন্ধুরা জানান,বিয়েতে এসে তাদের ভাল লেগেছে। ফেসবুকে গ্র“ুপে সিরাজের সাথে তাদের বন্ধুত্ব হয়েছে বলে তারা জানান। ফাবিহা খানম পান্না নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের বড় পিরিজপুর গ্রামের মৃত মুহিব উদ্দিনের তৃতীয় মেয়ে।

আর সিরাজ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের উলুয়াইল গ্রামের মৃত হাজি মখলিছুর রহমানের ছেলে। সিরাজ লন্ডন প্রবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকে তাদের পরিচয়। এ থেকে শুরু হয় তাদের প্রেমের সম্পর্ক। এক পর্যায়ে ঘর বাধাঁর সিদ্ধান্ত নেয় প্রেমিক যোগল। সিরাজ-পান্না প্রেমের সফল পরিণতির এই গল্প এখন নবীগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে চমক লাগিয়েছে।

পান্নার ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২ বছর ধরে ফেসবুকে মোছা. ফাবিহা খানম পান্নার সঙ্গে পরিচয় হয় সিরাজের। এর পর দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলেন তারা দুজনই বাক প্রতিবন্ধী। পরে তারা দুজনই সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। গত সাত দিন আগে সিরাজ লন্ডন থেকে মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে দেশে আসেন।

এসে দু পরিবারের যৌথ উদ্যোগে বিয়ের দিন ধার্য্য করা হয়। অতঃপর সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গতকাল ২১ এপ্রিল শুক্রবার ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ঘেষা নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি রহমান কমিউনিটি সেন্টারে বিবাহ কার্য সম্পন্ন হয়। পরে বাকপ্রতিবন্ধি প্রেমিকা নব বধু ফাবিহা খানম পান্নাকে নিয়ে বাকপ্রতিবন্ধি প্রেমিক স্বামী তার ঠিকানা মৌলভী বাজারে নিয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই