এগিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের বাংলাদেশ :

৭ বছরে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন

বিভিন্ন খাতে গত ৭ বছরে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে সরকার। এই সময়ে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচীর সুফল মিলছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, সরকারী-বেসরকারী বিনিয়োগ, রাজস্ব আয়, রফতানি, রেমিটেন্স আহরণ, দারিদ্র্য নিরসন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো তৈরি ও উন্নয়ন, বিদ্যুত উৎপাদন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার কমানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) এক প্রতিবেদনে সরকারের সাফল্যের এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী (২০২১ সাল) সামনে রেখে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দীর্ঘমেয়াদী রূপকল্প বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ২ হাজার মার্কিন ডলারে উন্নীত করা, শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ৩৭ শতাংশে, বেকারত্ব ও অর্ধ-বেকারত্বের হার ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং মাথাপিছু বিদ্যুত ব্যবহার ৬০০ কিলোওয়াট ঘণ্টায় উন্নীত করা ইত্যাদি।

এসব লক্ষ্য অর্জনে ইতোমধ্যেই ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্তমানে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। এসব পরিকল্পনার সুফল হিসেবে আর্থ-সামাজিক খাতে উন্নয়ন ঘটছে।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী প্রধান যেসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি এসেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- জিডিপি প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন বাজেট, বেসরকারী বিনিয়োগ, রাজস্ব আয়, রফতানি আয়, রেমিটেন্স আয় ও দারিদ্র্য নিরসন। জিডিপি প্রবৃদ্ধি : সরকার যখন প্রথমবার দায়িত্ব নেয় তখন দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশে উন্নীত হয়। সর্বশেষ সদ্যসমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসেবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশে। মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৫ ডলারে।

উন্নয়ন বাজেট : ২০০৫-০৬ অর্থবছরে উন্নয়ন বাজেটের আকার ছিল ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৯১ হাজার কোটি টাকায়। বর্তমানে চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর আকার বেড়ে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

বেসরকারী বিনিয়োগ : সরকারী বিনিয়োগ বেড়েছে ব্যাপক। সেই সঙ্গে বেড়েছে বেসরকারী বিনিয়োগও। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বেসরকারী বিনিয়োগ ছিল ৯৯ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। সেখান থেকে প্রায় তিনগুণ বেড়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা হয়েছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বেসরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে।

আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্ব (পিপিপি) গতিশীল করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পিপিপির জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হতে পারে। গত সাত বছরে এ খাতে নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে তেমন কোন সাফল্য নেই। তবে নতুন বাজেটে পিপিপি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। পিপিপি কার্যকর করতে এ খাতে বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পদক্ষেপ থাকবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

জানা গেছে, প্রতিবছর বাজেটে পিপিপির জন্য যে বরাদ্দ থাকছে, তা খরচ হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরেও পিপিপির আওতায় নীতিগতভাবে ৪২টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়ে তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে পরিবহন খাতের রয়েছে ১৬টি প্রকল্প। এছাড়া ৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, পর্যটন খাতে ৪টি, স্বাস্থ্যখাতে ৮টি, আবাসন খাতে ৫টি এবং শক্তি খাতে একটি প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু এসব প্রকল্পের কয়েকটি বাদে বেশিরভাগ প্রকল্পই আলোর মুখ দেখেনি বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই