‘৭ লাখ টাকা চুক্তিতে খুন করা হয় এমপি লিটনকে’

সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনকে খুন করার জন্য জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও গাইবান্ধা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) আবদুল কাদের খান খুনিদের সঙ্গে সাত লাখ টাকার চুক্তি করেন। এই সাত লাখ টাকার বিনিময়ে বাসায় ঢুকে খুন করা হয় এমপি লিটনকে।

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় গ্রেফতার আনোয়ারুল ইসলাম রানা (২৬) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা উল্লেখ করেছেন।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ময়নুল হাসান ইউসুফ আদালতে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি এই স্বীকারোক্তি দেন। গ্রেফতার আনারুল ইসলাম রানা উপজেলার ভেলারায় কাজীর ভিটি গ্রামের বাসিন্দা।

এর আগে, বুধবার মধ্যরাতে ঢাকা থেকে রানাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা সাত লাখ টাকা চুক্তিতে এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যা করে। এর মধ্যে শাহীন ও রানা ২ লাখ করে ৪ লাখ আর মেহেদী ৩ লাখ টাকা নেয়। আর কথা ছিল কাদের সংসদ সদস্য হলে তাদের প্রত্যেককে একটি করে পেট্রোল পাম্প করে দেবেন।

গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম জানান, গাইবান্ধা পৌর শহরের ব্রিজ রোড এলাকা থেকে আব্দুল হান্নান (২৫), রাশেদুল ইসলাম মেহেদী (২২) ও শাহীনকে (২৪) গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে আব্দুল হান্নানের বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্রামে। অপর দুইজনের বাড়ি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর সমস কবিরাজটারি গ্রামে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পলাতক রানাকে ঢাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রায় এক সপ্তাহ নজরদারির পর গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সদস্য আবদুল কাদের খানকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতার করে পুলিশ। বগুড়া শহরের রহমান নগরের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কাদের খান গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসন থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহবাজ মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি লিটন। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে ১ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ডা. কাদের খানসহ ১১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে ২৪ জনকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই