৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা: প্রাথমিক সমাপনী ২০১৮ পর্যন্ত

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কাজটি করা হয়। শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রাথমিক স্তর পঞ্চম শ্রেণির পরিবর্তে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে, প্রাথমিক ও ৮ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চলবে। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব হুমায়ূন খালিদ বলেন, ‘৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন রাজনৈতিক পর্যায়ে এটি চূড়ান্ত হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, শিক্ষকদের বেতনসহ সার্বিক কার্যক্রম প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখভাল করবে।’

তিনি বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসন্ন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে যথারীতি বিভিন্ন বোর্ড এ পরীক্ষাটি নেবে। পাশাপাশি ৫ম শ্রেণীর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাও নেয়া হবে।

তবে এই পরীক্ষা দুটি আগামী ২০১৮ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কেবল ৮ম শ্রেণীতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা থাকবে, না পঞ্চম শ্রেণীতেও নেয়া হবে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন খালিদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ এবং যুগ্ম সচিব একেএম জাকির হোসেন ভূঁইয়াসহ মোট তিনজন অতিরিক্ত সচিব, একাধিক যুগ্ম সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক মো. আলমগীর, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রতনসিদ্দিকী, শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিচালক মো. ফসিউল্লাহ প্রমুখ বৈঠকে যোগ দেন।

জানা যায়, ওই সিদ্ধান্তসমূহ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। দ্রুতই শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক এবং প্রাথমিক শিক্ষা স্তর ৮ম শ্রেণীতে উন্নীতকরণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে কারিকুলাম পরিবর্তন করা হবে। কেননা, ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের যোগ্যতাভিত্তিক কারিকুলামে শিক্ষা দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ষষ্ঠ থেকে এবং ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত জ্ঞানভিত্তিক কারিকুলামকে আরেক ধারায় লেখাপড়া করাত। এটা একই ধারায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে এনসিটিবি কাজ করছে বলে জানান এনসিটিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত নীতিনির্ধারণী এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে এখন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃত পাঠদানের অনুমোদনসহ সব কার্যক্রম ও কর্মকাণ্ড প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) নজরদারির আওতায় যাবে।

ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক স্তরের সব বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি, অনুমোদন, পাঠদান স্থগিত রেখেছে। বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অনুমোদন, শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনাসহ সব তৎপরতা পরিচালিত হবে ডিপিইর অধীনে।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব হুমায়ুন খালিদ বলেন, আমরা গোটা বিষয় মূল্যায়ন করব। যেখানে প্রয়োজন সেখানে প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেব। যেখানে প্রয়োজন নেই কিন্তু অতিরিক্ত আছে, তা বন্ধের ব্যবস্থা করব। আবার যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, কিন্তু বাকি তিনটি শ্রেণীতে লেখাপড়া করানোর মতো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই, সেখানে সরকারি বিদ্যালয়ে বাকি তিনটি শ্রেণী খোলার ব্যবস্থা করা হবে। দৈনিকশিক্ষা



মন্তব্য চালু নেই